বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে চূড়ান্ত অবস্থান ভারতের। ভারতের বিদেশ মন্ত্রকে উঠে এলো বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গ। বিদেশ মন্ত্রকের এই আলোচনায় স্পষ্ট, ইউনুস সরকারের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক উন্নতির আর কোন সম্ভাবনা নেই। বলা ভালো, ভারতের তরফে সরাসরি জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের দ্রুত নির্বাচন করাতে হবে, লইতে ভারতের সঙ্গে সে দেশের সম্পর্কের টানা পড়েন অব্যাহতই থাকবে।
কিছুদিন আগেই ভারতীয় সেনাপ্রধান বলেছিলেন, বাংলাদেশের বর্তমান সরকার জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সরকার নয় এটি একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। ফলে এই সরকারের সঙ্গে ভারত নতুন করে সম্পর্ক স্থাপনের দিকে এগোতে ইচ্ছুক নয়। এরপর ভারতের বিদেশ মন্ত্রী এস জয়শঙ্কর তিনিও জানিয়ে দিয়েছিলেন, সন্ত্রাসবাদের মদত দেওয়া এই সরকার শুধুমাত্র ভারতের বিরোধিতা করতে চায়। এরপরই সে দেশের প্রধান উপদেষ্টা মোহাম্মদ ইউনুসের তরফে বিভিন্ন বিবৃতি আসে ভারতের উদ্দেশ্যে। আর এবার ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের তরফ থেকে সাফ বার্তা বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গে।
দীর্ঘদিন ধরে অমীমাংসিত নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণে বাংলাদেশের জনগণ যখন লড়াই করছে, তখন জনগণের দাবির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ভারত যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাংলাদেশে নির্বাচনের আহ্বান জানিয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন যে বাংলাদেশে নির্বাচন ২০২৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে, তিনি আশ্বস্ত করেছেন যে তিনি এই সময়ের পরে ক্ষমতায় থাকবেন না। তবে, সেনাবাহিনী এবং রাজনৈতিক দলগুলি সহ অন্যান্য স্টেকহোল্ডাররা আগাম নির্বাচনের আহ্বান জানিয়েছে, যার ফলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, “বাংলাদেশের নির্বাচনের ক্ষেত্রে আমরা আমাদের অবস্থান খুব স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছি এবং আমরা ধারাবাহিকভাবে তা করে আসছি। বাংলাদেশের উচিত দ্রুততম সময়ের মধ্যে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জনগণের ইচ্ছা ও ম্যান্ডেট নিশ্চিত করা।” অন্যদিকে সম্প্রতি জাপান সফরে গিয়ে মোহাম্মদ ইউনুস নির্বাচন প্রসঙ্গে বলেন,”রাজনীতিবিদরা খুবই অধৈর্য, তারা ক্ষমতার আসনে বসতে পছন্দ করে। তাই আমি দীর্ঘদিন ধরে তাদের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছি যে ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে অথবা সর্বশেষে, ২০২৬ সালের জুনে, অর্থাৎ ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। কিন্তু এটা নির্ভর করবে কত দ্রুত সংস্কার করতে হবে দেশে তার উপর।
তবে,বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ জামান নির্বাচন নিয়ে তার অবস্থান বরাবর স্পষ্ট করেছে এবং সম্প্রতি জানিয়েছেন,যে গণঅভ্যুত্থানে দেশটির পরিবর্তন প্রধানমন্ত্রী কে ক্ষমতাচ্যুত করার পর প্রথম নির্বাচন ডিসেম্বরের মধ্যে অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত। কারণ যতদিন এগোচ্ছে ততোই বাংলাদেশ এক বিশৃঙ্খল অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আর এই সমস্ত পরিস্থিতি ধীরে ধীরে যখন আন্তর্জাতিক স্তরে আলোচ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে সেই আবহে এই এবার ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের চাপ ইউনূসের বিরুদ্ধে, তবে কি সাধারণ মানুষের শান্তি স্থিতিশীলতা নিয়ে খেলার দিন শেষ মহম্মদী ইউনুসের? ভারতেরএই চাপের পর নির্বাচন নিয়ে এখন কোন নতুন রোড ম্যাপ তৈরি করে ইউনুস প্রশাসন এখন সেটাই দেখার।
Discussion about this post