চারদিনের সরকারি সফরে লন্ডনে রয়েছেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মোঃ ইউনুস। সফরকালে সে দেশে পা রাখতে মোঃ ইউনুসের বিপক্ষে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন প্রতিরোধ বিক্ষোভ আবার তার পক্ষেও বেশ কিছু কর্মসূচি গড়ে উঠতে দেখা গিয়েছে। তবে শুধুমাত্র প্রধান উপদেষ্টা মোঃ ইউনুসকেই বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়নি তারপর সচিব শফিকুল আলমকেও বিভিন্ন ভাবে হেনস্তার শিকার হতে হয়েছে। মোহাম্মদ ইউনুস বিদেশ সফরকে ঘিরে যখন বাংলাদেশ তথা বিদেশের মাটিতেও অস্থির পরিস্থিতি সেই অবহেই আবার জল্পনার ছড়িয়েছে প্রশ্ন উঠছে, মোহাম্মদ ইউনুস কি হতে চলেছেন বাংলাদেশের পরবর্তী রাষ্ট্রপতি? কি এমন ঘটল এই লন্ডন সফরে, যে হঠাৎ করে এ প্রশ্ন উঠে আসলো। এর নেপথ্যে কারণই বা কি?
বর্তমান পরিস্থিতিতে মোঃ ইউনুস লন্ডন সফরে থাকাকালীন, বাংলাদেশের পরবর্তী রাষ্ট্রপতি পদে বসার বিষয়টি হঠাৎ করে সামনে আসলো। কারণ এই জল্পনাটিকে ঘিরেই দেখা গিয়েছিল লন্ডনে। ইংল্যান্ডের একটি অনুষ্ঠানে মহম্মদ ইউনুস প্রশ্নোত্তর পর্বে এমন কিছু উত্তর দিয়েছিলেন যেগুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যাচ্ছে এই জল্পনাটি সামনে আসছে। আবার সম্প্রতি বাংলাদেশে দাঁড়িয়েই প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে সেদেশের পরবর্তী নির্বাচনের সময় ঘোষণা করেছেন অর্থাৎ এপ্রিলে নির্বাচন হবে বাংলাদেশে এমনটাই জানিয়েছেন মোহাম্মদ ইউনুস। কিন্তু আবার এই সময়টি কিছুটা এগিয়েও আসতে পারে বলে সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে সেখানেও বিএনপির সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার একটি সমঝোতার ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে। যদিও প্রকৃত অর্থে বিএনপির সঙ্গে সমঝোতা হয়ে থাকলে, তারেক রহমানের সঙ্গে ইউনূসের বৈঠকে সেই সমঝোতার প্রকৃত রূপটা দেখতে পাবো। আর সে সমযতায় কি এই বিষয়টি উঠে এসেছে যে পরবর্তী নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে প্রধান উপদেষ্টা মোহাম্মদ ইউনুসকেই সেদেশের পরবর্তী রাষ্ট্রপতি করা হবে?
উল্লেখ্য ইংল্যান্ডের ওই অনুষ্ঠানে প্রশ্নোত্তর পর্বে মহম্মদ ইউস জানিয়েছেন, ১৭ বছর পর বাংলাদেশ একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হতে যাচ্ছে, যা আমাদের ইতিহাসে সবচেয়ে সুন্দর নির্বাচন। দেশের একটি সত্যিকারের নির্বাচন হতে চলেছে এমনটাই আশাবাদী। এর পাশাপাশি দেশের পরবর্তী সরকারের কোন দায়িত্বে তিনি থাকবেন কিনা সেই প্রশ্নেরও উত্তর দিয়েছেন ইউনুস কিন্তু সেই উত্তরটি নেতিবাচক। অর্থাৎ তিনি জানিয়েছেন দেশে নির্বাচনের পর পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের কোন দায়িত্বে থাকা ইচ্ছা নেই তার। অর্থাৎ তার এই ইচ্ছা না থাকার কথার ভিত্তিতে মনে করা হচ্ছে পরবর্তী সরকার যদি তাকে রাষ্ট্রপতির পদে সম্মানিত করতে চায় তবে হয়তো সে ক্ষেত্রে সেটিকে উপেক্ষা করবেন না মুহাম্মদ ইউনুস। অর্থাৎ এই দেশের এই বড় পদটিতে আসীন না হওয়ার ক্ষেত্রে কোন যথাযথ কারণ দেখা যাচ্ছে না। ক্ষমতার লোভী ইউনুস ক্ষমতার লোভে সে প্রস্তাবে রাজি হতেই পারে। আবার বিএনপির সঙ্গে সমঝোতার ক্ষেত্রে তার পরবর্তী রাষ্ট্রপতি হওয়ার সম্ভাবনা জোরালো হচ্ছে তার কারণ, মোহাম্মদ ইউনুস চাইছেন নির্বাচন পরবর্তীতে তার প্রিয় ছাত্র নেতারা এবং তাদের দল জাতীয় নাগরিক পার্টি যাতে এক প্রকার রাজনীতির লাইন লাইটে থেকে যায় অর্থাৎ যেন রাজনীতি থেকে হারিয়ে না যায় সেই চেষ্টা চালিয়ে যাবেন।
ফলে যদি মোহাম্মদ ইউনুস রাষ্ট্রপতি পদে বসে তবে ছাত্র নেতাদের রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি রাজনীতি থেকে সরে যাবার সম্ভাবনা আর থাকবে না। আর এই সুযোগটি হবে এন সি পি বা জাতীয় নাগরিক পার্টির জন্য একটি বড় হাতিয়ার। যদিও সেই সুযোগটি বিএনপি করে দেবে কিনা সেটা এখনো পর্যন্ত স্পষ্ট নয়। কিন্তু লন্ডনের তারেক রহমানের সঙ্গে ইউনূসের বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত হতেই অনেকেই বলছেন বিএনপির সঙ্গে অন্তর্ভুক্তির সরকারের সমঝোতা একপ্রকার হয়েই গিয়েছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে এই বৈঠকে শুধুমাত্র বিষয়গুলি চূড়ান্ত করা হবে। আর দেখা যাচ্ছে এই বৈঠকটিকে যথেষ্ট গুরুত্বসহকারী দেখছে বিএনপি কারণ সেখানে তারেক রহমানের সাথে উপস্থিত থাকতে পারে দলের অন্যান্য নেতৃত্ব। ফলে এই বৈঠক থেকে সমঝোতায় আসা যেতেই পারে যে বিএনপি দেশের ক্ষমতায় আসলে প্রধান উপদেষ্টা মোহাম্মদ ইউনুস রাষ্ট্রপতি হিসেবে সেই পদে বসবেন। আবার নেতিবাচক দিক থেকেও বিএনপি রাষ্ট্রপতির মত একটি সেনসিটিভ পদ অর্থাৎ রাষ্ট্রপতি চাইলে যে কোন মুহূর্তে দেশে জরুরি অবস্থা জারি করতে পারে সংবিধান ভেঙে দিতে পারে সেই রকম একটি পদে মোঃ ইউনুস এর মত একজন মানুষকে ভরসা করবে কিনা সেটা এখন আলোচ্য বিষয়।
Discussion about this post