বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুসকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের। মোঃ ইউনুসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চান না স্টারমার। এই কথা স্বয়ং মহম্মদ ইউনুসই তুলে ধরলেন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে। কিন্তু নিজের সম্মান ক্ষুন্ন করতে এই ধরনের একটি কথা কেন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে তুলে ধরলেন তিনি? নাকি স্বজ্ঞানেই নতুন কোন কৌশল তুলে ধরতে এই খবর প্রকাশ্যে আনলেন? উঠছে প্রশ্ন।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের মাধ্যমে যুক্তরাজ্যের এই প্রত্যাখ্যানের খবর প্রকাশে এনেছেন মোঃ ইউনুস। এই ফিনান্সিয়াল টাইমস যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক গণমাধ্যম। যেটি কেয়ার স্টারমার বিরোধী একটি গণমাধ্যম হিসাবেই পরিচিত। আবার এই ফিনান্সিয়াল টাইমস শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার কন্যার টিউলিপ সিদ্দিকের দুর্নীতি নেই বেশ কিছু রিপোর্ট প্রকাশ করেছিল। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমটি অনেকাংশেই মুহাম্মদ ইউনুসের সদয় একটি গণমাধ্যম। এমনকি ছাত্রসমাজ নয় একজন নতুন রাজনৈতিক দল গঠনে মুহাম্মদ ইউনুস উৎসাহ প্রদান করেছেন সেই খবরও এই ফিনান্সিয়াল টাইমসের মাধ্যমে প্রকাশ্যে এসেছিল। আর এখানেই জল্পনা শুরু হয়েছে যে এই ফিনান্সিয়াল টাইমসে কেন মোহাম্মদ নিজেকে ছোট করে খবরটি প্রকাশ্যে আনতেন বা গণমাধ্যমটি বা কেন এই বিষয়ে সাক্ষাৎকার নিল?
উল্লেখ্য এই আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের রিপোর্টে, বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ প্রত্যাখ্যান করেছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী এ কথা সরাসরি নিজেই স্বীকার করেছেন প্রধান উপদেষ্টা। জানা যাচ্ছে, শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুত শাসনামলে লুট হওয়া কোটি কোটি ডলার পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টার প্রতি সমর্থন সংগ্রহের লক্ষ্যেই এই সিদ্ধান্ত যুক্তরাজ্যের।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস ফিনান্সিয়াল টাইমসকে বলেছেন, যুক্তরাজ্যের উচিত বাংলাদেশের নতুন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের চুরি করা তহবিল খুঁজে বের করতে সাহায্য করার জন্য “নৈতিকভাবে” বাধ্যবাধকতা বোধ করা, আর বেশিরভাগ অভিযুক্তই এখন যুক্তরাজ্যে রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। যুক্তরাজ্যের সরকারি কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন যে প্রধানমন্ত্রী স্টারমার বর্তমানে ইউনূসের সাথে দেখা করার কোনও পরিকল্পনা করেননি এবং তিনি আর কোনও মন্তব্য করতেও অসম্মতি জানিয়েছেন। পাশাপাশি ইউনূস জানিয়েছেন, স্টারমার এখনও তার সাথে দেখা করতে রাজি হননি। সরাসরি কোনও কথা হয়নি।যদিও তিনি আরও যোগ করেন যে স্টারমার বাংলাদেশের প্রচেষ্টাকে সমর্থন করবেন তাতে তার কোন সন্দেহ নেই।
প্রসঙ্গত, গত বছর ছাত্র জনতার বিক্ষোভ আন্দোলনে শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ ত্যাগ করার পর থেকে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ মোহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে সে দেশে গঠিত হয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। আর ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রীশেখ হাসিনা এবং তার আওয়ামী লীগের আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে বাংলাদেশের তদন্ত স্টারমারের যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির উপর খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। চলতি বছরেই তৎকালীন দুর্নীতি দমন মন্ত্রী এবং স্টারমারের ঘনিষ্ঠ সহযোগী টিউলিপ সিদ্দিক দুর্নীতির অভিযোগে জড়িয়ে পরায় পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।
টিউলিপ সিদ্দিক শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার কন্যা। ইউটিউব তার বিরুদ্ধে আনা অন্যায় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন, তবে তিনি মন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। তবে তিনি এখনও একজন এমপি, সম্প্রতি একটি চিঠির মাধ্যনে ইউনূসের সাথে দেখা করার আবেদন জানিয়েছিলেন টিউলিপ।বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন কর্তৃক সৃষ্ট ভুল বোঝাবুঝি মিটিয়ে নিতে তিনি বৈঠক করতে চান প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে। কিন্তু মোহাম্মদ ইউনুস টিউটি সিদ্দিকের এই আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছেন বলেই জানিয়েছেন। পাশাপাশি প্রধান উপদেষ্টা জানান, এটি একটি আইনের সমস্যা এটি আইনি প্রক্রিয়া। টিউলিপ সিদ্দিকের তদন্তের বিষয়টি ব্যক্তিগত কোন বিষয় নয়।
Discussion about this post