ফের আলোচনায় জাতিসংঘ ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী! সরকার পতনের পর দীর্ঘ ১০ মাসে বহুবার জাতিসংঘ ও সেনাবাহিনীর নানারকম কথা উঠে এসেছে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে। মূলত জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন কে গৌরবময় করে তুলতে সেনাবাহিনীর অবদান অনস্বীকার্য। এবার বৈঠক সম্পন্ন হল জাতিসংঘ ও সেনাবাহিনীর! তবে কি দূরত্ব কমছে ছুটেছে এই দুই গোষ্ঠীর? হঠাৎ কেন এই বৈঠক? এই বৈঠকে কি ৫ আগস্ট পরবর্তী বা জুলাই আন্দোলন সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হতে পারে? উঠছে একাধিক প্রশ্ন।
বারংবার বলাও হয়েছে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে বীর সেনাদের অবদান ও গৌরবময় ইতিহাস যাতে কোনভাবেই কালিমা লিপ্ত না হয় সেদিকে নজর রাখতে হবে সেনা বাহিনীকে, অর্থাৎ সেনাবাহিনী ও সরকার এমন কোন সিদ্ধান্ত বা কাজ করবে না যাতে এই সম্মান ক্ষুন্ন হয়। মূলত সেনাবাহিনী ও জাতিসংঘকে নিয়ে সবচেয়ে বেশি আলোচনা শুরু হয়েছিল মূলত গত বছর ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর যখন জুলাই আন্দোলন নিয়ে জাতিসংঘ একটি রিপোর্ট পেশ করেছিল এবং সেই রিপোর্ট সম্বন্ধে সেনাবাহিনীকে অন্ধকারে রাখা হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠে আসে এবং সেই অভিযোগের উপর ভিত্তি করেই সেনা বাহিনী ও জাতিসংঘের মধ্যে দূরত্ব নিয়ে নানাবিধ আলোচনা সমালোচনা শুরু হয়। এবার সেই দূরত্ব কিছুটা ঘুরতে চলেছে কিনা সেই জল্পনা শুরু হলো কারণ, জানা গিয়েছে জাতিসংঘের প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন বাংলাদেশ সেনাপ্রধান তাও সেটি সেনাসদরে। কিন্তু কেন এই বৈঠক স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ জামানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন জাতিসংঘের জোরপূর্বক গুম বিষয়ক কার্যনির্বাহী দলের ডব্লিউজিইআইডি ভাইস চেয়ারপার্সন গ্রাজিনা বারানোভস্কার। ১৬ই জুন তার নেতৃত্বাধীন একটি প্রতিনিধিদল সেনা সদরে সেনাপ্রধানের সঙ্গে একটি সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। সেনাবাহিনীর ফেসবুক পেজ এবং বিভিন্ন বাংলাদেশি সংবাদ মাধ্যমে তা প্রকাশিত হয়েছে। সূত্রের খবর, এই সাক্ষাতে গ্রাজিনা বারানোভস্কা র্যাব, ডিজিএফআই, বিজিবি বিভিন্ন সংস্থায় অতীতে কর্মরত কিছু সেনা সদস্যের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তার জবাবে সেনাবাহিনী প্রধান জানিয়েছেন, এ ধরনের সেনা সদস্যরা সংশ্লিষ্ট সংস্থার অধীনে নিয়ন্ত্রণাধীন থেকে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বিচার প্রক্রিয়া ও মানবাধিকার রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক তদন্ত প্রক্রিয়ায় সর্বাত্মক সহযোগিতা করে যাচ্ছে। অর্থাৎ, এই বৈঠকে জাতিসংঘের প্রতিনিধির তরফ থেকে যেমন বিভিন্ন সেনা সদস্যদের বিরুদ্ধে নানা রকম অভিযোগ উঠে এসেছে এবং এর প্রেক্ষিতে সেনাপ্রধানের তরফ থেকে স্পষ্ট জবাব দেওয়া হয়েছে তা একেবারেই পরিষ্কার। কিন্তু এখানে কি কোনও ভাবেই ৫ অগাস্ট পরবর্তী জাতিসংঘের রিপোর্ট নিয়ে যেভাবে সেভাবে সেনাবাহিনীকে অন্ধকারে রাখা হয়েছিল সেই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে? চলছে বিস্তর জল্পনা।
Discussion about this post