দুই প্রতিবেশি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান নরেন্দ্র মোদি ও মহম্মদ ইউনুস। কিন্তু দেশকে স্থিতিশীল রাখতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি অনেকটাই পিছনে ফেলে দিয়েছেন বাংলাদেশ প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুসকে। কারণ, দুই দেশের সরকার প্রধানই বিদেশ সফরে গিয়েছেন। যেমন সম্প্রতি লন্ডন সফরে গিয়েছিলেন ইউনুস এদিকে কিং চার্লস এর আমন্ত্রণে এই সফর না হওয়ায় এটিকে সরকারি সফর বলতে নারাজ অনেকেই। পাশাপাশি লন্ডনে পৌঁছালে ব্রিটেন সরকারের তরফে তাকে কোন সংবর্ধনাও জানানো হয়নি। অন্যদিকে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদি সরকারি সফরে সাইপ্রাস গিয়েছেন, আর তাকে সংবর্ধনা জানাতে এয়ারপোর্টের প্রটোকল মেনে সেখানে পৌঁছে গিয়েছিলেন সরকারের বিভিন্ন শীর্ষ কর্তারা।
জানা যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে সমর্থনা জানাতে যেমন সাইপ্রাস সরকারের বিভিন্ন শীর্ষ আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন তেমনি উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় হাইকমিশনের অফিসাররা এবং সেনা। এমনকি সে দেশের রাষ্ট্রপতিও বিশেষ সম্মানে সম্মানিত করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। আর বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তিক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মোহাম্মদ ইউনু তিনিও ভেবেছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদির মতো একইভাবে সম্মানিত হবেন তিনি বিদেশের মাটিতে। কিন্তু হল একেবারেই বিপরীত। কারণ বিশ্বব্যাপী মুহাম্মদ ইউনুসের গ্রহণযোগ্যতা কোথায় গিয়ে ঠেকেছে তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ মোঃ ইউনুসের লন্ডন সফর। কারণ সেখানে তাকে নানা রকম বিক্ষোভের মুখে যেমন পড়তে হয়েছে, তেমনি দেখা গিয়েছে ব্রিটেনের রাজা কিংস চার্লসের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে একেবারেই পাত্তা পাচ্ছেন না ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস।
উল্লেখ্য, মুহাম্মদ ইউনূস আগামী ১৩জুন লন্ডনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে দেখা করতে লন্ডনে যান প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস। সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন সংক্রান্ত জটিলতা ও রাজনৈতিক অস্থিরতা নিয়ে তারেক রহমানের সঙ্গে আলোচনা করতেই এই সফর বলে মনে করা হয়েছে। কিন্তু সেখানে পা রাখতেই বিক্ষোভের মুখে পড়তে হলো তাঁকে। লন্ডনে থাকা বাংলাদেশীরা ইউনূসের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছিল। কালো পতাকা হাতে তাঁকে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান দেওয়া হচ্ছিলো। হাতে দেখা যায় ‘সে নো টু ইউনূস’ লেখা প্ল্যাকার্ডও। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ শেখ হাসিনাকে দেশছাড়া করার পর গোটা ইউনূসের বাংলাদেশে যে অরাজকতা, উগ্র মৌলবাদ ও হিংসার রাজত্ব চলছে তার জন্য দায়ী প্রশাসন। বাংলাদেশের মাটিতে মানবাধিকার লঙ্ঘন, গণহত্যা, আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থাকে শিকেয় তুলেছে এই মৌলবাদীরা। দ্রুত নির্বাচনের ও আওয়ামী লীগকে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ দেওয়ার দাবিসহ বিক্ষোভকারীরা চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের মুক্তির দাবি নিয়েও প্রতিবাদে সামিল হন।
মুহাম্মদ ইউনূস লন্ডনে যাওয়ার পর তাঁকে অভ্যর্থনা জানাতে ব্রিটিশ সরকারের পক্ষ থেকে যেমন কেউ আসেননি। তেমন এই সফরে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মারের সঙ্গে সাক্ষাতের কথা ছিল ইউনূসের। তবে পরে সেই বৈঠকের সম্ভাবনাও বাতিল হয়েছিল। মহম্মদ ইউনুস লন্ডনে পা রাখার পর থেকেই ইউনূসের বিরুদ্ধে যা চলেছে তা বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক। আর এই অবহে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেদ্র মোদি গত ২৪ বছরে প্রথমবার কোনও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী যিনি সাইপ্রাস সফর করলেন। আর এই সাইপ্রাস সফরে প্রধানমন্ত্রী রাজনীতির পাশাপাশি ভারতের শিল্প এবং ঐতিহ্যকে কূটনৈতিক সৌহার্দ্যের মাধ্যম হিসেবে তুলে ধরেছেন। বিভিন্ন উপহারের মাধ্যমে সে দেশের শীর্ষ আধিকারিকদের প্রতি সৌহার্দ্য পোষণ করেছেন। একদিকে যেমন প্রেসিডেন্ট নিকোস ক্রিস্টোডুলিদিসকে কাশ্মীরি রেশমের গালিচা উপহার দিয়েছেন তেমনই সে দেশের ফার্স্ট লেডি ফিলিপা কারসেরাকে উপহার হিসেবে দিলেন দিলেন অনবদ্য একটি রুপোর ক্লাচ। অর্থাৎ এই বিদেশ সফরে যেমন সম্মান প্রাপক প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তেমনি তিনি সম্মানিত করলেন সে দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের।
Discussion about this post