মব ভায়োলেন্স এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ালো বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে পড়েছে মব ভায়োলেন্স, আকস্মিকভাবেই হামলা চালানো হচ্ছে বিভিন্ন দোকানপাট ও প্রতিষ্ঠানের উপরে। এবং সেটি কোনরকম আইন শৃঙ্খলা কোন কিছুর পরোয়া না করেই। অর্থাৎ চারিদিকে স্বেচ্ছাচারিতা ও শক্তির প্রদর্শন শুরু করে দিয়েছে বিভিন্ন গোষ্ঠী। আর এই বিশৃঙ্খর পরিস্থিতি সামাল দিতে নাজেহাল বাংলাদেশের পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অর্থাৎ দেশে সুষ্ঠু রাজনৈতিক কর্তৃপক্ষ থাকলে এই ধরনের অরাজকতা ঠেকানো সম্ভব হতো। কিন্তু এবার সেনাবাহিনীর সিদ্ধান্ত তারা কোনভাবেই মব ভায়োলেন্স বরদাস্ত করবে না।
সেনা সদরের তরফ থেকে এবার স্পষ্ট ভাবে মব ভায়োলেন্সের বিরুদ্ধে বিশেষ সিদ্ধান্তের কথা প্রকাশ্যে আনা হলো। বরাবরই সে দেশের সেনাপ্রধান মব ভায়োলেন্সের বিরোধিতা করে এসেছেন এবার সেই কথাই জানালো সেনা সদর। এই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ায় ‘মব ভায়োলেন্স’ কমে আসার কথা জানিয়েছে সেনা সদর। সাধারণ মানুষের প্রাণের ক্ষতিসাধন, ‘মব ভায়োলেন্স’ এবং জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করতে পারে এমন যেকোনো কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ভবিষ্যতেও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে প্রস্তুত থাকবে।
উল্লেখ্য বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা সেনানিবাসের অফিসার্স এর এক ব্রিফিংয়ে সেনা সদরের মিলিটারি অপারেশনস ডাইরেক্টরেটের কর্নেল মহম্মদ শফিকুল ইসলাম জানান, ‘ দেশজুড়ে মব ভায়োলেন্স, ও জনদুর্ভোগ সৃষ্টিকারী বিভিন্ন শক্তির বিরুদ্ধে সেনাবাহিনী কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে ভবিষ্যতেও করবে এবং সেনা তৎপরতায় দেশজুড়ে মব ভায়োলেন্স এর সংখ্যা বৃদ্ধি অনেকাংশেই কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।’ পাশাপাশি এই ব্রিফিংয়ে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে কর্নেল মহম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, সেনাবাহিনী এখনও সরকারের পক্ষ থেকে কোনও সরকারি নির্দেশনা পায়নি । তবে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী সেনানির্বাচনসংক্রান্ত দায়িত্ব পালন করবে।
এবং সেনাবাহিনীর সক্রিয়তা প্রসঙ্গে ব্রিফিংয়ের বলা হয়, গত তিন সপ্তাহে ৫৬টি অবৈধ অস্ত্র ও ৯৯০ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনী। আর গত বছরের আগস্ট মাস থেকে বর্তমান সময়ে ৯ হাজার ৬৬৭টি অবৈধ অস্ত্র ও ২ লাখ ৮৬ হাজার ৭৫৪ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে। এ ছাড়া ১৫ হাজার ২৬২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে সেনাবাহিনী। এর মধ্যে কিশোর গ্যাং, তালিকাভুক্ত অপরাধী, ডাকাতসহ অন্যান্য অপরাধী রয়েছে। সম্প্রতি, ৪৫২ জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে চলতি মাসে । আর গত বছর আগস্ট থেকে এখনও পর্যন্ত মাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৫ হাজার ৪৭৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলেও জানাচ্ছে সেনা সদর। এবং এই সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর অভিযান চলমান আছে বলেও স্পষ্ট করা হয় এই ব্রিফিংয়ে।
Discussion about this post