হুগলির ‘কুর্সি’তে কে বসছেন? প্রশ্ন উঠছিল। এক্সিট পোল বলেছিল, রাজনীতির ময়দানে নবাগতা রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারিয়ে জিতবে লকেট চট্টোপাধ্যায়। তবে মঙ্গলবার ফলপ্রকাশের দিন বেলা বাড়তেই অঙ্ক গেল বদলে। ভোটগণনায় ক্রমাগত একের পর এক দফায় পদ্মপ্রার্থীর থেকে মার্জিনে এগিয়ে যান সবুজ প্রার্থী। চব্বিশের লোকসভা ভোটের প্রার্থী ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই রচনা বনাম লকেটের ‘মেগা ফাইট’ নজরে ছিল। কারণ ১৯-র লোকসভা ভোটেই এই আসন হাতছাড়া হয়েছিল তৃণমূলের। তবে এবার স্টার ম্যাজিকেই হুগলি আসন পুনরুদ্ধার করার রণকৌশলী সাজিয়েছিল তৃণমূল। ফলেও গেল ‘দিদি’র ইচ্ছে। রচনাকেই ‘দিদি নম্বর ওয়ান’ বানালেন হুগলির বাসিন্দারা। মহিলাদের মধ্যে জনপ্রিয় হলেও লড়াইটা খুব সহজ ছিল না।
বিপরীতে আরও এক তারকা প্রার্থী যিনি সেই কেন্দ্রের বিদায়ী সাংসদও। প্রচারে কোনওরকম খামতি রাখেন নি। ঝড়, জল, বৃষ্টি এমনকি তীব্র দাবদাহ উপেক্ষা করেও বেরিয়ে পড়তেন জনসংযোগে। তাঁর মন্তব্য ঘিরে সোশ্যাল মিডিয়ায় মিমও হয়েছিল প্রচুর। কিন্তু, সে সব খুব একটা গায়ে না মেখে লাগাতার চালিয়ে গেছিলেন প্রচার পর্ব। ফলও পেলেন। হুগলিতে লকেট চট্টোপাধ্যায়কে হারিয়ে জয় ছিনিয়ে নিলেন রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোটের ফলাফলের পরের দিনে সকালেই মায়ের মন্দিরে প্রণাম করে যাত্রা শুরু করলেন দিদি নম্বর ওয়ান। এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রচনা বলেন, ‘সাধারণ মানুষ অনেক আশা নিয়ে আমায় ভোট দিয়েছেন। আমার দাযিত্ব আরও অনেকটা বেড়ে গেল। দিদিকে কথা দিয়েছিলাম হুগলি ফিরিয়ে দেব, দিয়েছি’
এবার ৪২ টি লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে তৃণমূল করেছিল তারকাদের। এ বিষয় রচনা বলেন, ‘দিদির এই তারকা প্রার্থীরাই দেখিয়ে দেবে, বংলায় উন্নয়ন কীভাবে হয়’।
তবে কোন অঙ্কে লকেটের মত বর্ষণ নেত্রীকে মাত দিলেন দুদে নেত্রী? গত লোকসভায় জেতার পর থেকেই লকেট কে সেভাবে আর দেখা যায়নি তার সংসদীয় কেন্দ্রে। এমনকী পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে এসে ক্ষোভের মুখেও পড়তে হয়েছিল লকেটকে। তাঁর নামে নিখোঁজ পোস্টারও পড়ে বহু জায়গায়। এছাড়াও বিজেপির আরও বড় মাথা ব্যাথার কারন গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। আমজনতার মধ্যে ক্ষোভ ছিল লকেট চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে। ফলে হুগলি লোকসভা কেন্দ্রে লকেট নাম ঘোষণার পরেই দলের কর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করতে শুরু করেছিলেন। তাই এবার রচনা বন্দোপাধ্যায়কে তৃণমূল প্রার্থী ঘোষণা করার পর থেকেই কিছুটা হলেও হুগলিতে পদ্মপ্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায় ব্যাকফুটে ছিলেন। সেই বিষয়কেই হাতিয়ার করে বেরিয়ে গেলেন রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়।
Discussion about this post