এবার তাদের স্লোগান ছিল, ‘অব কি বার চারশো পার’। বিজেপি বার বার বলেছিল তারা একাই ৩৭০ পর করে দেবে। কিন্তু ৪ জুলাই লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশের দিন কার্যত দেখা গেলো বিজেপি একা ২৫০ আসনও পার করতে পারলনা, একা ২৪০-এই আটকে থাকলো। ফলে সরকার গড়তে বিজেপি নির্ভরশীল শরিকদের উপর। পশ্চিমবঙ্গেও বুথ ফেরত সমীক্ষায় বলা হয়েছিল এবার বাংলায় গেরুয়া ঝড় উঠতে পারে। আইপ্যাক প্রধান পিকের সমীক্ষাতে তাই উঠে এসেছিল। বার বার সোশ্যাল মিডিয়াতে এই নিয়ে তোলপাড় হয়েছে। বাংলায় এক নম্বর দল হতে চলেছে বিজেপি। কিন্তু সেই সমীক্ষা কার্যত ভুল প্রমাণিত হল। গোটা বাংলা জুড়ে সবুজের দাপট দেখা গেলো। পশ্চিমবঙ্গে বিপুল ভোটে জয়যুক্ত হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। যা নিয়ে কার্যত হতবাক বিজেপির শীর্ষস্থানীয় নেতৃত্বরা। একই ভাবে বাংলায় বামেরাও শুন্য হয়েছে। কংগ্রেস শুধু একটি আসনে জয় পেয়েছে। ২০১৯ – এ বিজেপির জয়ের আসন ছিল ১৮টি, এবার তা কমে হল ১২ টি। বিশেষ করে বামেদের ভরাডুবি হলো ২৪-এর ফল প্রকাশে । বাম দুর্গের একেবারেই শেষ হল বলা চলে।
ভোটের ফল প্রকাশের পরই তিন বামমনস্ক ব্যক্তি তথা শিল্পী মুখ খুললেন। প্রথমেই মুখ খোলেন অভিনেতা নাট্যকার কৌশিক সেন। তিনি বলেন, দেশের জনগন চোখে আঙুল দিয়ে বিজেপিকে দেখিয়ে দিয়েছে যে এদেশের দরিদ্র কৃষক, মজদুর সমাজের একটা অংশ তারা যে এখনও সজাগ সেটা এই ভোটের ফলাফলে স্পষ্ট। লোকসভা নির্বাচন সারা দেশের নির্বাচন। সেখানে পরধর্মসহিষ্ণুতা সব থেকে বড়। আমাদের দেশের সংবিধান সেটাই বলে। বিজেপি রাম মন্দির স্থাপনের মাধ্যমে ধর্মের সুড়সুড়ি দিয়ে ভোটে জেতার পন্থাই অবলম্বন করছিলেন। তাদের এই ধর্ম ভেদের রাজনীতি যে মানুষ ধোপে টিকতে দেয়নি তা অভিনেতা কৌশিকের গলায় স্পষ্ট।
অন্যদিকে পরিচালক কমলেশ্বর গলায়ও একই সুর। তার কথায়, ভারতবর্ষের মানুষ NDA -সরকারের উপর বিশেষ ভরসা রাখেনি। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের মানুষ দেখিয়ে দিয়েছেযে তারা ধর্মের রাজনীতি মানেনা। সেক্ষেত্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের উপর বঙ্গবাসী আস্থা রেখেছে। তিনি বলেন একজিট পোল মেলেনি। যাদবপুরে বাম প্রার্থী সৃজন ভট্টাচার্যের হারের বিষয়ে এমনকি গোটা বাংলায় বামেদের কার্যত শুন্য হয়ে যাওয়া নিয়ে পরিচালককে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জানান, এ বিষয়ে তিনি একা কোনো মতামত দিতে পারেন না , সবার যৌথ মতামত এখানে অন্যতম।
বাম মনস্ক বাদশা মৈত্রকে ভোটের ফলাফলের বিষয় নিয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনিও একই সুরেই কথা বলেন। খানিকটা অভিনেতা কৌশিকের সুরেই সুর মেলান তিনি। তার কথায়, তিনি লোকসভা ভোটের এই ফলাফলে খুশি। এমনকি উত্তরপ্রদেশের ফলাফলেও তিনি সার্বিক ভাবে খুশি। তিনি ভারতের জনগণকে শুভেচ্ছা জানিয়েছে তাদের সঠিক নির্বাচনের জন্য। কিন্তু রাজ্যে বাম একেবারে নিশ্চিহ্ন। এই বিষয়টি তাকে হতবাক করেছে।
Discussion about this post