হাঁড়ির হাল অবস্থা পদ্মাপাড়ে! অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মোহাম্মদ ইউনুসের শাসনামলে অস্থির পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে গোটা বাংলাদেশ জুড়ে। এর মাঝেই এবার বিদ্যুতের জন্য অন্য দেশের দ্বারস্থ হতে হচ্ছে ইউনুসকে। ত্রিপক্ষীয় চুক্তির আওতায় ভারত হয়ে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ রপ্তানি শুরু করেছে নেপাল। মূলত নেপালের তরফে বাংলাদেশে প্রায় ৪০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ রপ্তানি প্রক্রিয়া চালু করা হয়েছে ভারতীয় ট্রান্সমিশন লাইন ব্যবহার করে। মনে করা হচ্ছে বেশ কিছু বছর ধরেই বাংলাদেশের তরফে নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানির বিষয়ে পরিকল্পনা চালানো হচ্ছিল, আর এবার সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হতে দেখা গেল।
ত্রিপক্ষীয় চুক্তি অনুসারে, নেপাল ২০২৫ থেকে ২০২৯ সাল পর্যন্ত প্রতি বছরের ১৫ জুন থেকে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে বাংলাদেশে। এর অর্থ হলো, বছরের একটি নির্দিষ্ট শুষ্ক মৌসুমে নেপালের এই বিদ্যুৎ বাংলাদেশের বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণে সহায়তা করবে। বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন দাবি করা হচ্ছে, শনিবার, রাত ১২টা থেকে এই বিদ্যুৎ আমদানি শুরু হয়েছে।আর রবিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত প্রতি ঘণ্টায় ৩৮ মেগাওয়াট করে বিদ্যুৎ বাংলাদেশে পৌঁছেছে।
উল্লেখ্য ২০২৩ সালের মধ্যবর্তী সময়ে নেপালের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহালের ভারত সফরের সময় এই বিদ্যুৎ রপ্তানির বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সেসময় তিন দেশ আঞ্চলিক জ্বালানি সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক সংযোগ জোরদার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বলে সূত্রের খবর। সেই সময় গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ভারতীয় গ্রিড ব্যবহার করে বাংলাদেশে সরবরাহ করা হবে। গত বছরের ১১ জুন আওয়ামী লীগ সরকারে থাকার সময় সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে নেপাল থেকে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ কেনার প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়। নেপাল ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি অনুসারে, এই বিদ্যুতের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি ইউনিট ০.০৬৪ ডলার বা ৬ দশমিক ৪ সেন্ট। অর্থাৎ বাংলাদেশের এখন প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যয় ১১ টাকার বেশি।
অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা নেওয়ার পর গত অক্টোবরে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করতে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। নেপাল ইলেকট্রিসিটি অথরিটি ও ভারতের এনটিপিসি বিদ্যুৎ ভেপার নিগম লিমিটেডের সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় চুক্তিতে স্বাক্ষর করে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড-পিডিবি। অর্থাৎ নেপাল থেকে ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্মতি প্রদান করেছে নয়াদিল্লি। নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্পকমল দহল ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে আলোচনায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
Discussion about this post