বাংলাদেশে নতুন সরকারি ছুটি ঘোষণা অন্তরবর্তী সরকারের। ৫ অগাস্ট হাসিনা সরকারের পতন উদযাপনের জন্য এবার বড় পদক্ষেপ। দিনটিকে ছুটি হিসেবে পালন করার নির্দেশ দিয়েছে ইউনুস সরকার। তারপরও বিষয়টি সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে প্রকাশ্যে এনেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাংস্কৃতিক বিষয়ক উপদেষ্টা মুস্তাফা শাহরার ফারুকী।
বৃহস্পতিবার ঢাকায় অনুষ্ঠিত সাংবাদিক সম্মেলনে সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা তরফে জানানো হয় পাচ আগস্ট দিনটি ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানের দিন হিসেবে পালন করা হবে। এছাড়াও জুলাই অভ্যুত্থান ঘিরে আগামী পয়লা জুলাই থেকে কর্মসূচি শুরু করে পাঁচ অগাস্ট পর্যন্ত তা চালানো হবে। ক্ষমতাচ্যুত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বলছে বিক্ষোভগুলি ইসলামী উগ্রপন্থীদের দ্বারা সমর্থিত ছিল এবং এটি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার চেষ্টা ছিল। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকে স্মরণ করে এই বিপুল কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশের ইউনুস সরকার। এই কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য প্রসঙ্গে সরকারের তরফে সংস্কৃতি উপদেষ্টা বলেন,জুলাইয়ে যে রকম পুরো বাংলাদেশ এক হয়েছিল, আবার সে অনুভূতিটাকে ফিরিয়ে আনা।’ তিনি জানান, এই উদ্দেশ্য সাধনের জন্য, কিছু কর্মসূচি নিয়ে কাজ চলছে।’ বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং আরও বিস্তারিত তথ্য সামনে এনেছে। প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, বৈঠকে নয়জন উপদেষ্টা উপস্থিত ছিলেন। এদিকে, বাংলাদেশের মিডিয়ার ক্ষেত্রটি নিয়েও নতুন পদক্ষেপের পরিকল্পনার পাশাপাশি বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনের স্বায়ত্তশাসন নিয়ে একটা কমিটি হয়েছে, বলেও এদিন জানানো হয়। এছাড়াও শফিকুল আলম বলেন, জুলাই সনদ ঘোষণার জন্য একটি কমিটি হয়েছে। বৃহস্পতিবার ওই ব্রিফিংয়ে জানানো হয়েছে, দ্রুত জুলাই সনদ তৈরির জন্য কমিটি শিক্ষার্থী ও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কাজ করবে।
প্রসঙ্গত, ৫ আগস্ট বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের এক বছর পূর্ণ হতে চলেছে। সেই দিনটি উদযাপনের জন্য বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দিনটিকে ছাত্র-জনতা বিদ্রোহ দিবস হিসেবে পালন করার এবং দেশব্যাপী সরকারি ছুটি ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মূলত গতবছর ওই দিনে, বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন এক সহিংস ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানের মুখে পড়ে। নিরাপত্তার জন্য গুরুতর হুমকির সম্মুখীন হয়ে, শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন। পরে যে নতুন অন্তরবর্তী কালীন সরকার গঠন হলো বাংলাদেশ তখন থেকেই আওয়ামী লীগকে কার্যত রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া এবং দেশের মানুষের উপর অত্যাচার দুর্নীতি শুরু হয়ে গেল ওই সরকারের নেতৃত্বেই। চলতি বছরের বছরের শুরুতে, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করে এবং পরবর্তী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিষিদ্ধ করে, যার ফলে নির্বাচনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। ফলে বাংলাদেশের সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আর এবার আওয়ামীলিগের পতনের দিনটিকে উদযাপন করতে নয়া সিদ্ধান্তে উপনীত হলো অন্তর্ভুক্তি কালীন সরকার।
Discussion about this post