গত বছর ৫ই অগাষ্ট বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা সহ বিদেশে আশ্রয়রত বহু আওয়ামী লীগ নেতা, কর্মী সোশ্যাল মিডিয়াতে নিজেদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এমনকি শেখ হাসিনাও কখনও সরাসরি যোগ দিয়েছেন, আবার কখনও তার অডিও রেকর্ড করে সোশ্যাল মিডিয়াতে পোস্ট করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও বিবৃতি দিয়েছেন। আর এতেই ভয় পাচ্ছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। অর্থাৎ হাসিনা জ্বরে কাবু ইউনূস। কীভাবে ফেসবুকে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম থামানো যায়, তারই নানাভাবে চেষ্টা চালানো হচ্ছে। জানা যাচ্ছে, মহম্মদ ইউনূস ফেসবুকের মেটার সঙ্গে আলোচনা করেছেন। এই কার্যক্রম কিভাবে বন্ধ করা যায়, তার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। তবে কি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আওয়ামী লীগের কোনও পেজ থাকবে না? যারা আওয়ামী লীগের হয়ে কাজ করেন, তাদেরও কি শনাক্ত করা হবে? আসলে কি হতে চলেছে আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ?
জানা যাচ্ছে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূস ফেসবুকের কোম্পানি মেটার প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলোচনা করেছে। বৈঠক পরবর্তী ছবিও সোশ্যাল মিডিয়াতে পোস্ট করেছে। খবর, ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, মেসেঞ্জার, থ্রেডস, ইনস্টাগ্রাম সহ বেশ কয়েকটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং যোগাযোগ প্লাটফর্ম পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান মেটাকে, সম্প্রীতি ব্যাহত করে এবং ঘৃণা ছড়ায়, এমন কার্যকলাপ মোকাবিলার জন্য উপায় খুঁজতে এই আলোচনা। মহম্মদ ইউনূস জানিয়েছেন, এটি একটি বড় সমস্যা। এটার বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য একটি উপায় খুঁজে বের করতে হবে। বুধবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন মেটার এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের পাবলিক পলিসিবিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট সাইমন মিলনার এবং পাবলিক পলিসি ম্যানেজার রুজান সারওয়ার। বৈঠকে ইউনূস জানান, বাংলাদেশ একটি ঘনবসতিপূর্ণ দেশ। একটি ভুল শব্দ গোটা দেশকে অস্থিতিশীল করে দিতে পারে। কিছু লোক ইচ্ছাকৃত এই কাজটি করে। জানা যায়, মেটা কর্মকর্তা মিলনার বলেন, মিথ্যা তথ্য প্রতিরোধে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে তারা প্রস্তুত। বিশেষ করে আগামী বছর আসন্ন নির্বাচনের আগে। গত কয়েক দিনে বাংলাদেশের বিভিন্ন সংস্থার কর্তৃপক্ষ এবং মানবাধিকার সংগঠনের সঙ্গে তারা বৈঠক করেছেন বলেও জানান তিনি।
এখন থেকেই রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, যখন বলা হচ্ছে, আওয়ামী লীগের তরফ থেকে এমন ঘৃণা বা উস্কানিমূলক কথা চাউর করা হচ্ছে, অন্যদিকে একইভাবে মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধেও ঘৃণা বা অপতথ্য ছড়ানো হচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টা কি নিরপেক্ষ অবস্থান থেকে এই কথাটি বলেছেন? যেভাবে দেশের বাইরে থেকে নির্দেশ দিয়ে মব কালচার করা হচ্ছে বাংলাদেশে, সেটার বিরুদ্ধে কি কোনও অ্যাকশন নেবে অন্তর্বর্তী সরকার? তার জন্য কি মেটাকে জানানো হয়েছে? যদি সেটা করে থাকে, তবেই অপ তথ্যের বিরুদ্ধে লড়াই হবে। তবেই বোঝা যাবে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিরপেক্ষ অবস্থান নিচ্ছে। বলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
Discussion about this post