সরকারের ছত্রছায়ায় গড়ে উঠেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি বা এনসিপি। সরকারী সুবিধা ব্যবহার করে দল গঠন ও পরিচালনার অভিযোগ ছিল দলটির বিরুদ্ধে। তবে, গঠনের চার মাসের মধ্যে তারও চেয়ে অনেক বেশি অভিযোগ জমা পড়েছে দলটির নেতাদের বিরুদ্ধে। একের পর নতুন অভিযোগের স্তুপ হচ্ছে জমা। দলটির নেতাদের বিরুদ্ধে মব জাস্টিস আর শত শত কোটি টাকার দুর্নীতি অভিযোগের রেশ কাটতে না কাটতেই এবার উঠেছে যৌন হয়রানির অভিযোগ। আরও ভয়ঙ্কর, টর্চার সেল গঠন করে চাঁদাবাজির জলজ্যান্ত প্রমাণও গণমাধ্যমে ভাসছে এনসিপির মিত্র বৈষম্যবিরোধীদের বিরুদ্ধে। প্রশ্ন উঠছে, যারা রাজনীতিতে নতুন বন্দোবস্ত আনতে চেয়েছিল তারা আর কতটা বিতর্কের জালে বন্দি হবে? আবার অনিয়ম, দুর্নীতি আর গুরুতর অপরাধের দীর্ঘ তালিকা তৈরির পরও দলটির নেতাদের কারও বিরুদ্ধে গ্রহণযোগ্য ও দৃশ্যমান কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুসের ঘনিষ্ঠ ছাত্র সমন্বয়করা নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করলেও রাজনীতিতে তাদের অবস্থান এখনো পাকা হয়নি কিন্তু তার মাঝেই এসেছে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ। তেমনি এবার দেখা যাচ্ছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিরপুর অফিস যেন এক টর্চার সেলে রূপান্তরিত হয়েছে। ব্যবসায়ীকে ধরে এনে নির্যাতন করে ব্লাঙ্ক চেক ও স্টাম্পে স্বাক্ষর করিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঢাকা মহানগরের যুগ্ম আহ্বায়ক সাদমান সানজিদ ও রিফাতুল হক শাওনের বিরুদ্ধে। অধিকাংশ সদস্যই এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের ছোট ভাই পরিচয়ে কর্তৃত্ব স্থাপন করে মিরপুরজুড়ে। তারা নাহিদ ইসলামের সঙ্গে তোলা একাধিক ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ ও বিভিন্ন দপ্তরে কর্মকর্তাদের দেখিয়ে প্রভাব বিস্তার করেন বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। আর এই অভিযোগের আবেগ এই সামনে এলো এক ভয়ংকর অভিযোগ জাতীয় নাগরিক পার্টির বিরুদ্ধে।
জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষারের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠে এলো। উল্লেখ্য,এনসিপির নারী নেত্রী তাসনুভা জেবিনের সাথে যুগ্ম আহ্বাহক সারোয়ার তুষারের একটি ফোনালাপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সেই সুত্রে তাসনুভা জেবিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অভিযোগ প্রকাশ করেন যে, সারোয়ার তুষার তাকে যৌনতার প্রস্তাব দিয়েছেন। সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের পর তাকে দল থেকে বহিষ্কার করার হুমকি দেন তুষার। জাবিন অভিযোগটি সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করলে তা দ্রুত ভাইরাল হয় এবং দলের ভেতরেও চাপ তৈরি হয়।
প্রথম দিকে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বিষয়টি এড়িয়ে গেলেও জনমত ও দলের অভ্যন্তরীণ চাপে অবশেষে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করা হয়। জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষারের বিরুদ্ধে নিজ দলীয় নারী নেত্রীকে অনৈতিক প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগে অবশেষে দলীয় শৃঙ্খলাবিষয়ক নোটিশ জারি করেছে এনসিপি নেতৃত্ব। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অভিযোগটি ভাইরাল হওয়ার পরেই এ পদক্ষেপ নেওয়া হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে।
Discussion about this post