ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে কি সম্পর্কের টানাপোড়েন তৈরি হয়েছে? পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনীর আমেরিকা সফর করতেই এই প্রশ্নটা আরও বেশি করে উঠছে। আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি আমেরিকা এবং ভারতের মধ্যে সম্পর্ক অবনতি হয়, তবে তার বেশি প্রভাব পড়তে পারে বাংলাদেশে। এদিকে শোনা যাচ্ছে, যখন আমেরিকাতে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান, ঠিক তখনই ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল, কিন্তু ভারতের তরফে সেটি প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে বলে খবর। আর ঠিক সেই সময় বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান আমেরিকা সফরে গিয়েছেন। সেটা নিয়ে নানা তত্ত্ব খাড়া করছেন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা। অন্যদিকে শেখ হাসিনা এখনও ভারতে। তবে হাসিনার কি হবে ভারত আমেরিকার সম্পর্কে ভাটা পড়লে?
এই মুহূর্তে চারিদিকে আলোচনা চলছে, যে আমেরিকা এবং ভারতের মধ্যে সম্পর্কের ভাটা পড়ছে কিনা। জানা গিয়েছে, আমেরিকাতে যখন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনীর রয়েছেন, তখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে টেলিফোন করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এমনকি জানা গিয়েছে, ৩৫ মিনিট ফোনালাপ হয়েছে দুই রাষ্ট্রপ্রধানের। এবং সেই টেলিফোনে ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে আমেরিকা সফরের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। কিন্তু মোদী সেটি প্রত্যাখ্যান করেন। আর এখানেই প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। যেখানে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান উপস্থিত, সেখানে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে ডাকার কারণ কি? কারণ প্রত্যেকেই জানে, ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক কোন জায়গায় রয়েছে! বিশেষ করে অপারেশন সিঁদুরের সময় থেকে কেমন সম্পর্ক!
এমনকি প্রশ্ন উঠছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প কি পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক বেশি উন্নত করতে চাইছে? এমনিতেই অপারেশন সিঁদুরের মাধ্যমে ভারত পাকিস্তানের সে সংঘর্ষ তৈরি হয়েছিল, সেখানে দাঁড়িয়ে ডোনাল্ড দাবি করছিলেন, তার মাধ্যমেই সংঘর্ষ বিরতি হয়েছে। কিন্তু ভারত সেই দাবি মানেনি। ভারতের দাবি, এই যুদ্ধ বিরতি হয়েছে দুই দেশের সেনাপ্রধান পর্যায়ে আলোচনার মাধ্যমে। আর এই পরিস্থিতিতে নরেন্দ্র মোদী যখন আমেরিকা সফরে গেলেন না ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমন্ত্রণে, তখন কি সম্পর্কে ছেদ পড়ল? আবার অন্যদিকে সেই সময় আমেরিকার সফরে বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান কি করছেন? এই প্রশ্নও উঠছে। তিনি নাকি মার্কিন মুলুকে উচ্চ পর্যায়ে শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সেখানে গিয়ে নাকি করিডোর এবং বন্দর ইসুতে আলোচনা হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই খলিলুর রহমান, বিভিন্ন সময় বাংলাদেশের বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন। বাংলাদেশের সেনাপ্রধানকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনার পিছনে নাম উঠেছিল এই খলিলুর রহমানের। তারপরও এই বিতর্কিত ব্যক্তিকে মহম্মদ ইউনুস তার পদে বহাল রেখেছেন।
আর এদিকে ভারত আমেরিকার সম্পর্কের চির ধরলে, শেখ হাসিনার কি লবি কাজ করছে না? এই প্রশ্নও উঠছে। এমনকি ভারত আমেরিকার সম্পর্কের চির ধরলে শুধুমাত্র বাংলাদেশ নয়, শেখ হাসিনার জন্য বিপদ নিয়ে আসতে পারে। ভারতের আশ্রয়ে রয়েছে শেখ হাসিনা। যদি আমেরিকার সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক খারাপ হয়, তবে কতদিন ভারতে আশ্রিতা থাকতে পারবেন হাসিনা, সেটা প্রশ্নাতীত। এর পাশাপাশি শোনা যাচ্ছিল, ভারত একটি সুন্দর পরিকল্পনা করে বাংলাদেশে শেখ হাসিনাকে ফেরানোর ছক কষছে। সেটা আদৌ বাস্তবায়িত হবে কিনা, সেই নিয়েও আলোচনা তৈরি হয়েছে। অন্যদিকে এক্ষেত্রে লাভবান হবে মোহাম্মদ ইউনূস এবং তার সরকার। তবে আমেরিকার উদ্দেশ্য ঠিক কি? চীনকে টার্গেট করে কি বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক অন্য মাত্রায় নিয়ে যেতে চান? নাকি বন্দর, করিডোরের বিষয়টিকে মাথায় রেখে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করতে চাইছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প?
Discussion about this post