গরমে পুড়ছে বাংলা। বৈশাখের শুরুতে অর্থাৎ এপ্রিল মাস জুড়ে একটিও কালবৈশাখীর মুখ দেখলো না রাজ্যবাসী । মৌসম ভবন জানাচ্ছে এপ্রিলের শেষ দিনেও কলকাতায় ঝড়বৃষ্টির কোনও সম্ভাবনা নেই। আবহাওয়াবিদরা সমীক্ষার রিপোর্টে জানিয়েছেন, গত বছর ২০২৩-এর মার্চ ও এপ্রিল মাসে একটি করে মোট দুটি কালবৈশাখী পেয়ে ছিল রাজ্য ।মৌসম ভবন জানাচ্ছে এপ্রিলের শেষ দিনেও কলকাতায় ঝড়বৃষ্টির কোনও সম্ভাবনা নেই।অর্থাৎ ২০২৪ সালে কালবৈশাখী শূন্যই থাকবে আমাদের রাজ্য ।এখন কালবৈশাখীর অপেক্ষা মে মাসে। ২০২৩-এর এপ্রিলের শেষ দিনে একটা কালবৈশাখী পেয়েছিল তিলোত্তমা । তবে গোটা এপ্রিলে ওই একটাই কালবৈশাখী। তার আগে আরও একটি মরশুমের প্রথম কালবৈশাখী দেখা দিয়েছিল মার্চ এর মাঝামাঝিতে । এ বছর ২০২৪ এর শুরুর মরসুম টা পেরিয়ে গেলো বিনা কালবৈশাখীতে। অর্থাৎ, ২০২৪ সালের মার্চ-এপ্রিল মিলিয়ে একটা কালবৈশাখীরও দেখা মিললো না। তবে কি মে-র উপরেই ভরসা রাখছেন আবহাওয়াবিদরা ?
কিন্তু এমন পরিস্থিতি একেবারেই বিরল বিগত আবহাওয়ার রেকর্ডে! পুনের আইআইটিএম-র তথ্য অনুযায়ী সাধারণত মার্চ-এপ্রিল এবং মে মাস মিলিয়ে মোট ১২টি কালবৈশাখী পেত। কলকাতা ২০২৩ এর মে-তে কালবৈশাখী পেয়েছে পাঁচটি।
আবহাওয়া দপ্তর দেশের বর্ষাকালের সময়সীমায় বদলের বিষয়ে নিশ্চিত। তবে কী এবার কালবৈশাখী নিয়েও নতুন সিদ্ধান্ত নেবেন? মূলত কালবৈশাখী মানেই একটা প্রবল ঝড়বৃষ্টি তবে সব ঝড়বৃষ্টি কালবৈশাখী হয়না । ঝড়বৃষ্টির সময়ে কোনও জায়গায় টানা এক মিনিট ধরে যদি প্রতি ঘণ্টায় কমপক্ষে ৪৫ কিলোমিটার বেগে হাওয়া বইতে থাকে , তবেই সেই ঝড়বৃষ্টি কে কালবৈশাখী বলা হয়। আলিপুর আবহাওয়া জানাচ্ছেন, ২০২৩-এর এপ্রিল কলকাতায় ঘণ্টায় ৭৯ কিলোমিটার বেগে দমকা হাওয়া বইতে দেখা গিয়েছিল। তবে তার স্থায়িত্ব ৬০ সেকেন্ডের থেকে ৩সেকেন্ড কম হওয়ায় তাকে কালবৈশাখী হিসাবে মান্যতা দেওয়া হয়নি ।
এই কালবৈশাখীর সম্ভাব্য কারণ হিসেবে আবহবিদরা জানাচ্ছেন , ছোটনাগপুর মালভূমির শূন্যস্থান পূরণ করতে দেশের পশ্চিম দিক থেকে প্রচুর পরিমানে গরম হাওয়া বা বলা চলে ‘লু’তীব্র গতিতে প্রবেশ করছে । ওই লু এর প্রভাব এত বেশি যে তার ধাক্কায় বঙ্গোপসাগরের জ্বলিয় বাষ্প দেশের ভূখণ্ডে ঢুকতে পারছে না।
এ বছরও সমুদ্রের জলীয় বাষ্প কার্যত প্রবেশের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাড়িয়েছে শক্তিশালী ‘লু’। তবে, হিমালয়ের সক্রিয়তার জন্য উত্তর দিক থেকে ঠান্ডা বাতাস নীচে নামছে। একই সঙ্গে বাতাসের স্তরের তাপমাত্রাও পতন হতে দেখা যাবে।এরপরই বাষ্পপূর্ণ বাতাসের সঙ্গে উষ্ণ বাতাস মিশে হয়ে মেঘ জমার প্রতিকূল পরিস্থিতি তৈরি হবে।আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে খবর এর ফলেই মে মাসের ৫ তারিখ থেকে গোটা বঙ্গের আবহাওয়ায় পরিবর্তনের প্রবল সম্ভাবনা থাকছে। এবার দেখার বিষয় মরশুমের প্রথম কালবৈশাখীর দেখা মেলে কিনা এই বৃষ্টির আবহে ।
Discussion about this post