বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রে ভোটের আগে আচমকা প্রার্থীপদ বাতিল হয়ে গিয়েছে বিজেপির দেবাশীষ ধরের। সেই জায়গায় পদ্ম শিবিরের তরফে প্রার্থী করা হয়েছে সঙ্ঘ পরিবার ঘনিষ্ঠ দেবতনু ভট্টাচার্যকে। যদিও দেবাশীষের নামে ইতিমধ্যে দেওয়াল লিখন ও একাধিক প্রচার কর্মসূচি সারা হয়ে গিয়েছে। সেই আবহে আচমকা প্রার্থীপদ থেকে তাঁর সরে যাওয়া বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী শতাব্দী রায়ের ক্ষেত্রে কি বাড়তি সুবিধা দেবে? এমন প্রশ্নই উঠতে শুরু করেছে রাজনৈতিক মহলে।
আগামী ১৩ মে চতুর্থ দফায় বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ। তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে এই কেন্দ্রে এবারে প্রার্থী করা হয়েছে তিন বারের সাংসদ শতাব্দী রায়কে। ২০০৯ সালে ভরা বাম জমানায় বীরভূম আসনে জয়ী হয়ে জোড়াফুল শিবিরের মুখে হাসি ফুটিয়ে ছিলেন শতাব্দী রায়। তার পরের দুটি সাধারণ নির্বাচনে অর্থাৎ ২০১৪ এবং ২০১৯ সালেও নিজের জয় ধরে রেখেছিলেন তারকা সাংসদ। এদিকে এবারের নির্বাচনে বীরভূমে বিজেপির তরফে প্রার্থী করা হয়েছিল প্রাক্তন পুলিশকর্তা দেবাশীষ ধরকে। যদিও চাকরি থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর তাঁকে নো ডিউজ সার্টিফিকেট দেয়নি রাজ্য। মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় যা জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক। নো ডিউজ সার্টিফিকেট জমা না দেওয়ার কারণে তাঁর মনোনয়ন বাতিল করে দিয়েছে কমিশন। যদিও মনোনয়ন বাতিল ঘোষণার আগেই দেবাশীষের বিকল্প হিসেবে দেবতনু ভট্টাচার্য বীরভূমের জেলাশাসকের দফতরে গিয়ে মনোনয়ন জমা দেন। আচমকা প্রার্থী বদলে দ্বিধা দ্বন্দ্বে ভুগছেন গেরুয়া শিবিরের কর্মী সমর্থকরা। দলের তরফে প্রথমে প্রাক্তন পুলিশকর্তা দেবাশীষের নাম বীরভূমের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করার পর কর্মী সমর্থকরা দেওয়াল লিখন শুরু করে দিয়েছিলেন। এমনকি একাধিক রোড শো করে ভোট প্রচার ও জনসংযোগ সেরেছিলেন দেবাশীষ ধর। তার মনোনয়ন বাতিল হয়ে যাওয়ায় পদ্ম শিবিরের কর্মীদের মনোবল ধাক্কা খেয়েছে, সেই সঙ্গে ছন্নছাড়া অবস্থা তৈরী হয়েছে বীরভূম জেলা বিজেপির সংগঠনে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এই পরিস্থিতিতে ফায়দা তুলতে পারে তৃণমূল। বিজেপির সংগঠনের মধ্যে এমন দ্বিধা-দ্বন্দ্বের পরিস্থিতি তৈরী হওয়ায় ভোট বাক্সে অনেকটা সুবিধা পেতে পারেন জোড়াফুল শিবিরের প্রার্থী শতাব্দী রায়। যদিও বিষয়টি নিয়ে শতাব্দী রায় কৌশলী মন্তব্য করেছেন। দেবাশীষের প্রার্থী হওয়া কিংবা না হওয়া তাঁর জয়ে কোনও প্রভাব ফেলবে না বলে দাবি করেন তিনি।
অন্যদিকে দেবাশীষ ধরের বদলে যাঁকে প্রার্থী করেছে বিজেপি সেই দেবতনু ভট্টাচার্য নয় এর দশকে আরএসএসের প্রচারক হিসাবে বীরভূমের সিউড়িতে কাজ করেছেন। বর্তমানে ক্লাস্টার ইনচার্জ হিসাবে দায়িত্বে রয়েছেন তিনি। বীরভূম, বোলপুর, কাটোয়া এবং বর্ধমান লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপির পর্যবেক্ষক হিসেবে কাজ করছেন দেবতনু। শতাব্দী রায়ের সঙ্গে কতটা লড়াই দিতে পারবেন তিনি তা জানা যাবে ৪ জুন ফল ঘোষণার পর।












Discussion about this post