মালদহ দক্ষিণে সংখ্যালঘু ভোটাররা মুখ ফিরিয়ে নিল তৃণমূল থেকে। সুজাপুর থেকেই ১ লক্ষ ২৮ হাজারের বেশি লিড পেলেন ঈশা খান চৌধুরী। এই ঘটনায় চোরা বালি দেখছে বিজেপি, অভিমানের সুর তৃণমূলের গলায়
২০২১ এর বিধানসভা ভোট। দক্ষিণ মালদহ লোকসভার ৭ টি বিধানসভার মধ্যে ৬ টি তেই জয়ী হয়েছিল রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল। ২০২৪ এ লোকসভা ভোটে প্রায় সবটাই গেল পাল্টে। প্রাপ্ত ভোটের ভিত্তিতে দক্ষিণ মালদহবাসীর প্রথম পছন্দ থেকে সটান তৃতীয় পছন্দে পাড়ি তৃণমূলের। দক্ষিণ মালদহ ৬৫ শতাংশ মানুষ সংখ্যালঘু হওয়া সত্ত্বেও বিজেপি উঠে এল দ্বিতীয়স্থানে। সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্কে জয়ী হল কংগ্রেস। গণি খান পরিবারের সদস্য তথা ডালুপুত্র ঈশা খান চৌধুরীকে দক্ষিণ মালদহবাসী বেছে নিলেন আগামীদিনের সাংসদ হিসেবে। ইংলিশবাজার, মানিকচক ও বৈষ্ণবনগর ছাড়া বাকি চারটি বিধানসভায় ব্যাপক ব্যবধানে লিড পেয়েছেন কংগ্রেস প্রার্থী ঈশা। রাজ্য থেকে জাতীয় স্তরে যেখানে ধর্মের ভিত্তিতে ভোটব্যাঙ্ক গুণে থাকে তৃণমূল ও বিজেপির মত দল, সেখানে কংগ্রেসের অবস্থান অনেকটাই নিরপেক্ষ ও সকল ধর্মের প্রতি সহিষ্ণু। তাই বহরমপুরে হেরে গিয়ে অধীর চৌধুরীকে বলতে শোনা গিয়েছিল তিনি জাতপাত রাজনীতির শিকার হলেন
ভোট মিটে গিয়েছে। গণনার ফলও বেড়িয়ে পড়েছে। কোন বিধানসভায় কে এগিয়ে কে পিছিয়ে। কেন পিছিয়ে তার ময়নাতদন্ত শুরু হয়েছে । আর সেখানেই দেখা যাচ্ছে মালদহ সুজাপুর বিধানসভায় ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনে রেকর্ড ভোটে জয়ী হয়েছিলেন তৃণমূল প্রার্থী আব্দুল গণি। কিন্তু ২০২৪ এ গিয়ে দেখা গেল উল্টো ছবিটাই। প্রায় ১ লক্ষ ২৮ হাজারেরও বেশি ভোটের ব্যবধানে এই বিধানসভা থেকে লিড পেয়েছে ইশা খান চৌধুরী। দুর্নীতি, স্বজনপোষণ, চাকরি চুরি, চাল চুরির মত বহু গুরুতর অভিযোগ ছিল রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে। তবে ভোট শেষে দেখা গেল বাংলার মানুষ সেই দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারকেই বেছে নিয়েছেন। কিন্তু কেন? নানা মুণির নানা মতের মতো নানা কথা , বিচার-বিশ্লেশণ উঠে আসছে। সেখানে ওয়ার্ড ভিত্তিক, বিধানসভা ভিত্তিক প্রাপ্ত ভোটের আলোচনায় চোরা বালিরও সন্ধান মিলছে।
ভোট না পেয়ে স্বাভাবিকভাবে অভিমান ধরা পড়েছে তৃণমূল নেতাদের গলায়। মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বে এত উন্নয়ন সত্ত্বেও কেন ভোট পেলেন এই প্রশ্ন তুলে ভোটদাতাদের মধ্যে দ্বিচারিতা লক্ষ্য করলেন তৃণমূল নেতা কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী
নির্বাচনের আগে মালদহ সফরে এসে দলীয় কাউন্সিলরদের সতর্ক করে গিয়েছিলেন সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। নির্দেশ ছিল পুরো ভোটের যে ভোটটা পেয়ে কাউন্সিলরা নির্বাচিত হয়েছিলেন সেই ভোটটাই ধরে রাখতে হবে লোকসভায়। ভোটের ফল বেরতেই ঘুরে গেল পুরো খেলাটাই।
মালদহ থেকে মাধব কুমার মণ্ডলের রিপোর্ট নিউজ বর্তমান
Discussion about this post