রবিবার সন্ধ্যা সোয়া সাতটায় রাষ্ট্রপতি ভবনে তৃতীয়বারের জন্য প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন নরেন্দ্র মোদী। তার আগে এদিন সকালে রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধীর স্মৃতিসৌধে গিয়ে শ্রদ্ধা জানালেন মোদী। তারপর মোদী যান প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর সৌধ ‘সদৈব অটল’-এ। সেখানেও ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান তিনি। মোদীর সঙ্গে ছিলেন রাজনাথ সিংও। তারপর পর তাঁরা যান রাজধানীর জাতীয় যুদ্ধ স্মারক বা ন্যাশনাল ওয়ার মেমোরিয়ালে। সেখানে শহিদ সেনানিদের প্রতি পুষ্পস্তবক দিয়ে প্রার্থনা করেন মোদী। যদিও বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির মতে, এটি প্রধানমন্ত্রী মোদির দ্বিচারিতা ছাড়া কিছুই নয়।
রবিবার সন্ধ্যে সোয়া সাতটায় রাষ্ট্রপতি ভবনে নরেন্দ্র মোদীকে শপথবাক্য পাঠ করান রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। এদিন মোদীর পাশাপাশি তাঁর মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্যও শপথ গ্রহণ করেন। তবে প্রতিরক্ষা সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রক এনডিএর শরিকরা দাবি করেছেন বলে খবর। বিজেপি চায় অর্থ, প্রতিরক্ষা, স্বরাষ্ট্র, বিদেশমন্ত্রক এবং রেলের মতন গুরুত্বপূর্ণ দফতর গুলি নিজেদের হাতে রাখতে। কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে অমিত শাহকে চাইছে না অনেক জোট সঙ্গীই। জোট সঙ্গী টিডিপিকে বুঝিয়ে সুজিয়ে রাজি করানোর কাজ চলছে বলে সূত্রের খবর। সেক্ষেত্রে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকের পূর্ণমন্ত্রীরা আজ শপথ নাও নিতে পারেন বলে জানাচ্ছে একটি সূত্র।
মোদীর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমসিঙ্ঘে, নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দহল প্রচণ্ড, মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জু সহ একাধিক রাষ্ট্রনেতা। তবে মোদীর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান নিয়ে ইতিমধ্যেই বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। শনিবারই কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দেন তিনি আমন্ত্রণ পত্র পাননি। আমন্ত্রণ পাননি ইন্ডিয়া জোটের অনেক নেতাও। তবে কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খার্গে ডাক পেয়েছেন, তবে তিনি যাবেন কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল। তবে শেষ বেলায় অনুষ্ঠানে দেখা মিলল খার্গের।
সংবিধান মাথায় ঠেকিয়ে শ্রদ্ধা জানানো এবং গান্ধীজীর সমাধিতে পুষ্পার্ঘ্য দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোকে কটাক্ষ করেছে কংগ্রেস। দলের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ বলেছেন, ‘তাঁর আদর্শগত সৌভ্রাতৃত্ব এমন একটি বিষাক্ত পরিবেশ তৈরি করেছিল যে, ১৯৪৮ সালের ৩০ জানুয়ারি ঠাণ্ডা মাথায় মহাত্মা গান্ধীকে হত্যা করা হয়। তাঁর যে সমস্ত সহকর্মী নাথুরাম গডসেকে নায়ক হিসেবে তুলে ধরেন, তাঁদের বিরুদ্ধে তিনি কখনও কোনও পদক্ষেপ করেননি। একবার নয়, দুবার সংসদ ভবনে তিনি গান্ধীজীর মূর্তি স্থানান্তরিত করেছেন। তিনি ভুল দাবি করেছিলেন যে, ১৯৮২ সালে মহাত্মা গান্ধীকে নিয়ে সিনেমা তৈরির আগে পর্যন্ত গান্ধীজীকে কেউ চিনতেন না। বারাণসী, আহমেদাবাদ থেকে শুরু করে তিনি বিভিন্ন গান্ধীবাদী প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছেন। ২০২৪ সালের ৮ মে দুজন ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে কালো টাকা ভর্তি টেম্পো চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করেছিলেন। আমরা ইডি মারফৎ পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছিলাম। আজ সেই দুই ভদ্রলোক শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত।’
Discussion about this post