স্কুলগুলোতে মোটামুটি গরমের ছুটি পড়ে গেছে। সঙ্গে কলকাতায় পড়েছে কাঠফাটা গরম। মাঝে মধ্যে বৃষ্টি ও কালবৈশাখী হলেও সেইভাবে গরম কমতেই চাইছেনা।এ বছর শহর কলকাতায় তাপমাত্রার যা পারদ চড়েছে তাতে বসে না থেকে মনে হয়, একটু ঠান্ডা পাহাড়ি পরিবেশ থেকে ঘুরে আশায় ভালো। ঘোরাও হবে, আবার কয়েকদিনের জন্য সাময়িক শান্তিও পাবেন।পশ্চিমবঙ্গে যেমন রয়েছে বরফ চাদরে ঢাকা হিমালয় পর্বত বা সতেজ ও সবুজ চা বাগানের মাঝে ট্রেকিং রুট, তেমনি আছে পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড় বা বেলপাহাড়ির গদরসিনী পাহাড়ের সহজ ট্রেকিং রুট । তাই এই গরমে স্বস্তি পেতে নিজের রাজ্যের এই বিশেষ জায়গা গুলিতে ট্রেকিং এ বের হাওয়াই যায়। চলুন জেনে নেওয়া যাক জায়গা গুলির সমন্ধে।
কালিম্পং
কালিম্পং তিস্তা নদীর ধারে একটি শৈলশিরার উপর অবস্থিত। মনোরম জলবায়ু ও সহজগম্যতা একে জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র করেছে। উদ্যানপালনে কালিম্পং বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এখানে নানাপ্রকার অর্কিড দেখা যায়।কালিম্পঙ এর একটি ছোট্ট গ্রাম কাগে যার একদিকে সম্পূর্ণ কালিম্পঙ অন্যদিকে সিকিম পাহাড় ঘেরা। নির্জন, এখান থেকে দেখতে পাওয়া যাবে কাঞ্চনজঙ্ঘা। এই পাহাড়ে বসতি নেই বললেই চলে। কয়েকটি হোমস্টে রয়েছে যেখান থেকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের সাথে কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন। রাতের আকাশ ও পাহাড় যেখানে এক হয়েছে যাবে আর মনে হবে যেন সকল তারা নক্ষত্র পাহাড়ে নেমে এসেছে।
সান্দাকফু
সান্দাকফু নেপালের ইলাম জেলা এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সর্বোচ্চ পর্বত শৃঙ্গ। এটি পশ্চিমবঙ্গ- নেপাল সীমান্তের দার্জিলিং জেলার সিঙ্গালিলা পর্বতের সর্বোচ্চ শিখর। শিখরটি সিঙ্গালিলা জাতীয় উদ্যানের কিনারায় অবস্থিত এবং শীর্ষে কয়েকটি হোটেল সহ সামিটের একটি ছোট্ট গ্রাম রয়েছে। ঋতুভেদে সান্দাকফু সেজে ওঠে বিভিন্ন সাজে। ট্রেকের পথে রয়েছে সিঙ্গলিলা জাতীয় উদ্যান। এখানে রেড পান্ডার মত বিরল প্রজাতির পশু ও পাখি দেখতে পাওয়া যায
বামুনপুখুরি
সর্পিল আকৃতির পাহাড়ি নদী রুংসুর ঠিক পাশেই অবস্থিত বামুনপুখুরি। অপূর্ব প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ এই ঠিকানা। চারদিকে গাছের বুনো গন্ধ আর চা বাগান থেকে আসা অপূর্ব ঘ্রাণ মন ভাল করে দেবে। কংক্রিটের শহর থেকে দু’দন্ড সবুজের শান্তি পেতে চাইলে এই পথে ট্রেক করতে হবে। শীত এবং গ্রীষ্ম এখানে ট্রেক করার আদর্শ সময়।
নেওড়া ভ্যালি
নেওড়া উপত্যকা জাতীয় উদ্যান হচ্ছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কালিম্পং জেলায় অবস্থিত একটি জাতীয় উদ্যান।চারদিকে বাঁশ এবং পাইন গাছের মধ্যে দিয়ে ট্রেক করতে মন্দ লাগবেনা। পথে নানা রকম বাহারি গাছ, যেমন, অর্কিড , স্ট্রবেরির মতন গাছ দেখতে পাবেন । এছাড়া রেড পান্ডা সহ নানা রকম পশুপাখির দর্শন আপনার ট্রেককে আনন্দদায়ক করে তুলবে।
গোর্খে
একেবারে সিকিমের সীমান্তবর্তী গ্রাম। বাতাসে কান পাতলে শুধু পাখির ডাক আর পাহাড়ি নদীর স্রোতের শব্দ কানে আসবে। শ্রীখোলা থেকে রামমাম প্রায় ১২ কিলোমিটারের পথ। সেখান থেকে গোর্খে আরও কিছুটা। গোটা পথজুড়ে রডোডেনড্রন, পাইন,ওক গাছেদের সারি। ঘুঘু, ওরিওল, মোনাল পাখির কূজনে ভরে থাকবে চারপাশ। রামমাম কম জনবহুল এলাকা। সেখানে মূলত শেরপারা বাস করেন। সেখানে আবার আলু, ভুট্টা, বাজরার চাষও হয়।
Discussion about this post