ভারতীয় রেল প্রতিদিন দেশের নানা প্রান্ত থেকে কয়েক হাজার ট্রেন চালায় যাত্রীদের নিরাপদে এবং দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার জন্য। ফলে কম খরচে দেশের এক শহর থেকে অন্য শহরে যাওয়ার জন্য ট্রেনের বিকল্প নেই। অনেকেই বলেন, ভারতে দ্রুত, আরামদায়ক এবং নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছতে ট্রেনই সেরা। কিন্ত আবার অনেকে এই ট্রেনে ভ্রমণকে বিরক্তিকর বলেও দাবি করেন। কিন্তু ভারতীয় রেল যাত্রীদের সুবিধার জন্য বেশ কয়েকটি নিয়মকানুন লাগু করেছে। বেশ কয়েকটি আইন আছে শুধুমাত্র রেল সংক্রান্ত। ফলে সেগুলি সম্পর্কে যদি আপনি ওয়াকিবহাল থাকেন তবে ট্রেনযাত্রা হবে আরও নিরাপদ এবং সুখকর।
ভারতীয় রেলে বেশ কয়েকটি শ্রেণির কামরা রয়েছে। প্রতিটি শ্রেণিতেই যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য এবং সুযোগ-সুবিধা আলাদা আলাদা। ভাড়ার মূল্যেও ফারাক থাকে প্রতিটি শ্রেণিতে। তবে ভারতের সাধারণ মধ্যবিত্ত মানুষ বেশি পছন্দ করেন স্লিপার শ্রেণিতে যাতায়াত করতে। কারণ রিজার্ভেশনের জন্য এই শ্রেণিতে বাইরের লোকজন উঠতে পারে না। বা উঠলেও অভিযোগ করলে আরপিএফ তাঁদের ট্রেন থেকে নামিয়ে দেবে। কিন্তু বেশিরভাগ সময়ই এই স্লিপার বা এসি থ্রি টায়ার কামরায় যাত্রীদের মধ্যে সিটে বসা নিয়ে ঝগড়া, অশান্তি লেগে যায়। কারণ এই দুটি শ্রেণিতে তিনটি করে আসন বা বার্থ থাকে। অনেক সময় দেখা যায়, নীচের বার্থে থাকা ব্যক্তি গভীর রাত পর্যন্ত বসে থাকেন। ফলে মধ্যবর্তী বার্থের যাত্রী ঘুমোতে পারেন না। আবার সকাল হয়ে গেলেও মধ্যবর্তী বার্থের যাত্রী শুয়ে থাকলে নীচের বার্থ বা আপার বার্থের যাত্রীরা নিজের সিটে বসতে পারেন না। এই নিয়ে ঝামেলা বাধে প্রায়সই। এমনকি হাতাহাতি পর্যন্ত বেধে যায়। কিন্তু জানেন কি, এই আসনে বসা বা বার্থে শোয়া নিয়ে রেলের নির্দিষ্ট নিয়ম আছে। সেটি হল রাত ১০টা থেকে পরদিন সকাল ৬টা পর্যন্ত স্লিপার এবং এসি থ্রি টায়ার আসনে বসা যায় না। এই সময় সকলকেই শুয়ে পড়তে হয়। ফলে যদি কেউ রাত ১০টার পর বসে থাকেন, তবে আপনি রেলকর্মীদের অভিযোগ করুন। আবার একই নিয়মে সকাল ৬টার পর যদি কেউ মিডল বা লোয়ার বার্থে শুয়ে থাকেন, তবে একই অভিযোগ করা যায়।
রেলের আরেকটি নিয়ম হল রাত ১০টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত কোনও টিকিট পরীক্ষক সংরক্ষিত কামরায় টিকিট পরীক্ষা করতে আসবেন না। যদি ওই সময়ের মধ্যে কোনও স্টেশন থেকে কোনও যাত্রী ট্রেনে চড়েন তবে তাঁর টিকিট পরীক্ষা করা যায়। ফলে আপনি নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে পড়ুন, টিকিট পরীক্ষক এসে বিব্রত করলেও আপনি অভিযোগ জানাতে পারবেন নির্দিষ্ট উপায়ে। পাশাপাশি রাতে চলন্ত ট্রেনে যদি কেউ জোরে গান চালায় সেটাও আইনত অপরাধ। গান শুনতে হলেও তা ইয়ারফোনে শুনতে হবে।
Discussion about this post