দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে কোতয়ালি ভবনে অবহেলা-অযত্নে পড়ে রয়েছে বরকত সাহেবের গাড়িটি। মাঝে মধ্যে কংগ্রেস কর্মীদের কেউ কেউ চলে আসেন বরকত সাহেবের গাড়িটি স্বচক্ষে চাক্ষুস করতে। একসময় এই গাড়িটি করেই সর্বত্র দেখা যেত গণি খান চৌধুরীকে। WMD/4085। মালদহের কোতোয়ালি ভবনের গ্যারেজে আপাতত ঠাঁই মার্সেডিজ বেঞ্চের এই গাড়িটির। একসময় দারুন জৌলুস থাকলেও আজ চার চাকাটির সর্বত্র অযত্নের ছাপ । বিগত প্রায় ২০ বছর আগে গাড়িটিকে রাস্তায় দেখলেই পথের দুপাশে লোক দাঁড়িয়ে পড়তেন। হাতজোড় করে প্রণাম করতেন। কেউবা সেলাম জানাতেন গাড়িটির ভেতরে বসে থাকা এক ব্যক্তির উদ্দেশে। যিনি মালদহের রাজনীতির এক বড় নাম। রাজনীতির পরিসরে কাজ করেছেন ইন্দিরা গান্ধি, রাজীব গান্ধির সঙ্গে। এই গাড়ি ব্যবহার করতেন খোদ গণি খান চৌধুরী। জমিদার পরিবারে জন্ম ১ লা নভেম্বর ১৯২৭ সালে গণি খানের জন্ম। ব্রিটিশ পরবর্তী ভারতে জড়িয়ে পড়েন রাজনীতির সঙ্গে। ১৯৮০ থেকে ২০০৬। টানা এতগুলো বছর ভারতীয় লোকসভার নির্বাচিত সদস্য ছিলেন। শুধু তিনি নন। তাঁর পরিবারের একাধিক ব্যক্তিত্ব রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তার ভাই আবু হাসেম খান চৌধুরী দক্ষিণ মালদহের বিদায়ী সাংসদ। ডালু পুত্র ঈশা খান চৌধুরীও দীর্ঘ বছর রাজনীতিতে রয়েছেন। বোন রুবী নূরের কন্যা মৌসম বেনজির নূর রাজ্যসভার সাংসদ। ২০০৯ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত মালদহ উত্তর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ ছিলেন। তার আরেক ভাই আবু নাসের খান চৌধুরী সুজাপুর বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক ছিলেন। তিনি ২০১৫ সালে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন। গোটা পরিবারটাই রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। রাজনৈতিক বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে একসময় এই গাড়িটি ছিল বরকত সাহেবের ভরসা। জনসভা হোক বা বৈঠক কিংবা একটু ঘুরে আসা, এই গাড়িটি বরকত সাহেব ব্যবহার করতেন। ২০০৬ সালে কংগ্রেস নেতা এ বি এ গনি খান চৌধুরী চৌধুরী প্রয়াত হন। দেখতে দেখতে পেরিয়ে গিয়েছে ১৮ টা বছর। তবে বরকত সাহেবের গাড়িটি ভোলেননি কেউ। কোতোয়ালি ভবনে আসলে কংগ্রেস কর্মীরা মাঝে মধ্যেই দেখে যান চারচাকার মার্সেডিজ বেঞ্চ। গাড়িটি দেখলেই তাঁদের চোখে ভেসে ওঠে পুরনো সেইসব দিনের কথা।
মালদহ থেকে মাধব কুমার মণ্ডলের রিপোর্ট নিউজ বর্তমান
Discussion about this post