কয়েকদিন আগেই উচ্চ মাধ্যমিকের রেজাল্ট আউট হয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই, এর পরেই ছাত্র ছাত্রীরা উচ্চ শিক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেয়। এবং তারা তাদের পছন্দ মতন বিষয় নিয়ে পড়াশুনো করে কলেজে। একটি বিশেষ সমীক্ষা বলছে, বর্তমানে বেশিরভাগ পড়ুয়ারা কৃত্রিম মেধা বা ‘এআই’ নিয়ে উচ্চ শিক্ষার স্বপ্ন দেখছেন। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে, আইআইটি খরগপুর এই সব বিশ্ববিদ্যালয় গুলিতে স্নাতকোত্তরে ‘এআই’ পড়ার সুযোগ আছে। এবং ছাত্রছাত্রীরা যদি ‘ডেটা সায়েন্স’ বা ‘কম্পিউটার সায়েন্সে’র মতন বিষয়গুলি নিয়ে কলেজে ভর্তি হন, তাহলে তারা কৃত্রিম মেধা বা ‘এইআই’ নিয়ে পড়তে পারবে।যার জন্য আমাদের রাজ্যে নিত্যনতুন ইঞ্জিয়ারিং কলেজ ও তৈরি হচ্ছে।
বেশ কিছুদিন আগেই আলিপুরদুয়ারে একটি নতুন সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের প্রতিষ্ঠা হয়েছে।অল ইন্ডিয়া কাউন্সিল ফর টেকনিক্যাল এডুকেশন থেকে ইতিমধ্যেই অনুমোদন পেয়েছে কলেজটি।শুধু তাই নয়, রাজ্যে এই প্রথম কোনও সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে AI অর্থাৎ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ানো হবে। তার পাশাপাশি এই কলেজে কম্পিউটার সায়েন্স, ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং এর মতন বিষয় গুলিও পড়ানো হবে। নতুন এই কলেজে মোট বরাদ্দ আসন সংখ্যা ১৮০। যার মধ্যে আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স – র আসন সংখ্যা মোট ৩০ টি।
পাশাপাশি আমাদের রাজ্যে আরো বেশ কয়েকটি কলেজে এআই পড়ানো হচ্ছে, যেমন – ব্রেনওয়ার ইউনিভার্সিটি, নেতাজি সুভাষ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ও শিলিগুড়ি ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজিতে কৃত্রিম মেধার শিক্ষা দান চলছে।পাশাপাশি উল্লেখ্য,জেইই মেইনস বা অ্যাডভান্সের মতো সর্বভারতীয় প্রবেশিকার মাধ্য়মে এআইয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে ভর্তি হতে পারবেন পড়ুয়ারা।অন্যদিকে, রাজ্য জয়েন্টের মাধ্যমেও রয়েছে এই কোর্সে প্রবেশ করার সুযোগ।
ইতিমধ্যেই উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ, একাদশ ও দ্বাদশ স্তরে এই বিষয়টিকে শেখানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।সংসদ সূত্রে খবর, একাদশ-দ্বাদশের পড়ুয়াদের কৃত্রিম মেধা নিয়ে দেওয়া হবে প্রাথমিক জ্ঞান। আগামী ২০২৫-২০২৬ শিক্ষাবর্ষ থেকেই একাদশ ও দ্বাদশ স্তরে চালু হয়ে যাবে আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্সের শিক্ষা দান।
পাশাপাশি আরও দুটি বিষয়ের ও শিক্ষাদান হবে, একটি মেশিন লার্নিং ও অন্যটি প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ।এই বিষয় গুলিতে প্র্যাকটিক্যাল ক্লাসের উপর বিশেষ জোর দেওয়ার চিন্তা ভাবনা রয়েছে সংসদের।আর সেক্ষেত্রে অতিরিক্ত দুটি শ্রেণীতে বিভক্ত করে, ১০ ঘণ্টা মতন ক্লাস নিতে পারেন শিক্ষক শিক্ষিকারা।তাছাড়া, একাদশ শ্রেণীর সিলেবাসে রাখা হচ্ছে কম্পিউটার ফান্ডামেন্টালের সমস্ত বিষয়। যার মধ্যে থাকবে পাইথন প্রোগ্রামিং, লিনিয়ার অ্যালজেব্রা, ফাউন্ডেশন অফ এআই ও রিজনিং।কলেজ কর্তৃপক্ষ সূত্রে খবর, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বিষয়টিকে তারা বিশেষ গুরুত্ব সহকারে পরিচালনা করবেন। কারণ, বর্তমান কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অগ্রগতির যুগে এই নতুন কোর্সটি পড়ুয়দের চাকরির বাজারে অনেকটাই এগিয়ে রাখবে তা বলাই যায়।
অন্যদিকে আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডার(IMF) জানাচ্ছেন, আগামী দিনে অধিকাংশ কাজই কৃত্রিম মেধাকে ব্যবহার করেই হবে। তার ফলে দুনিয়া জুড়ে যেমন বেকারত্ব বাড়বে, ছোট বড়ো কোম্পানিতে ছাঁটাই বাড়বে, তেমনি ‘এআই’ প্রযুক্তিতে দক্ষদের কাজের বাজারে চাহিদা থাকবে তুঙ্গে। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এ র কাজ জানা থাকলে তারা বিগ ডেটা স্পেশ্যালিস্ট, ডেটা ইঞ্জিনিয়ার, সিকিওরিটি অ্যানালিস্ট ইত্যাদি পদে অগ্রাধিকার পাবেন। একজন আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইঞ্জিনিয়ারের বেতন কাঠামো আনুমানিক বার্ষিক ৯ – ১০ লক্ষ টাকা।
Discussion about this post