ভারতীয় ফুটবলের সর্বকালের সেরা কোচ সৈয়দ আব্দুল রহিম । রহিমের কোচিংয়ে ভারত কে এশিয়ার ব্রাজিল বলা হত। দুবার এশিয়ান গেমস জয়, অলিম্পিক ফুটবলের সেমিফাইনালে ওঠা, সেই সবই ঘটেছিল রহিমের কোচিং-এ। সেই কারণে ভারতীয় ফুটবলের স্বর্ণযুগ বলা যায় তার সময়কে । নায়ক অজয় দেবগন স্থির করেন রহিমের জীবনের অজানা কাহিনী নিয়ে তৈরি করবেন একটি সিনেমা । ২০ এপ্রিল রিলিজ করল রহিমের জীবন কাহিনী নিয়ে সিনেমা , ময়দান ।
সৈয়দ আব্দুল রহিম পেশায় ছিলেন একজন স্কুল শিক্ষক, কিন্তু নেশা ছিল ফুটবল । নিজেও একসময় খুব ভালো ফুটবল খেলতেন। কিন্তু ভারতীয় ফুটবলের তার নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে একজন সফল কোচ হিসাবে । চূনি গোস্বামী ,প্রদীপ ব্যানার্জি, জার্নাল সিং, তুলসীদাস বলরাম , পিটার থঙ্গরাজ ,অরুণ ঘোষ এইসব প্লেয়ারকে নিয়ে এক দুর্দান্ত দল গড়ে তুলেছিলেন তিনি । ১৯৫০ সালে তিনি ভারতীয় ফুটবল দলের ফুল টাইম ম্যানেজার হিসেবে নিযুক্ত হন।
সে বছরই ভারতীয় ফুটবল দল বিশ্বকাপের জন্য ছাড়পত্র পাওয়া সত্ত্বেও, বাজেট কম থাকার জন্য খেলতে যেতে পারিনি ব্রাজিলে। জেদি রহিম সাহেব ঠিক করলেন এই গরিব ভারতীয় টিমকে তিনি চ্যাম্পিয়ন করবেন । ১৯৫১ সালে এশিয়ান ফাইনালে দর্শক ভরা স্টেডিয়ামে ইরানকে এক শূন্য গোলে হারিয়ে এশিয়ান গেমস ফুটবলে প্রথম সোনা জেতে ভারত রহিমের কোচিংএ । সারা পৃথিবীর অবাক হয়ে গেল ভারতের এই সাফল্যে । আমরা জানি ভারতীয় দলে বিদেশীরা কোচিং করেন আর ভারতীয়রা থাকেন তার সহকারী হিসেবে, কিন্তু রহিম সাহেব প্রধান কোচ ছিলেন এবং তার সহকারী ছিলেন ব্রিটিশ কোচ বার্ড ব্রেডলে। যিনি এসেছিলেন রহিম সাহেবের কাছে কোচিং শেখার জন্য । এরপর ১৯৫৬ সাল এই গরিব ভারতীয় দলকে নিয়ে তিনি পাড়ি দিলেন অস্ট্রেলিয়ায় মেলবোর্ন অলিম্পিক খেলার জন্য । অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ঘরের মাঠে তাঁদের ৪-২ গোলে হারিয়ে সেমি ফাইনালে ওঠে ভারতীয় দল । সেই ম্যাচে ভারতের হয়ে হ্যাটট্রিক করেছিলেন নেভিল ডি সুজা । অলিম্পিকের সেমিফাইনালে ভারত এটাই। এখন পর্যন্ত ভারতীয় ফুটবলের সর্বোচ্চ সম্মান।
অবশ্য সেমিফাইনালে ভারত যুগোস্লাভিয়ার কাছে হেরে যায়। ১৯৬০ সালে অলিম্পিকে প্রথম রাউন্ডে হেরে যাওয়ায় রহিম সাহেব কিছুটা দমে যান । তিনি বুঝতে পারেন তার শরীরে কিছু একটা অসুবিধা হচ্ছে । আসলে ততদিনই ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে গেছেন তিনি। ডাক্তারের কথা না শুনে তিনি তখনও কোচিং করেই যাচ্ছেন , ভারতকে চ্যাম্পিয়ন করার বাসনায় । ১৯৬২ সালের এশিয়ান গেমসের ফাইনালে দক্ষিণ কোরিয়াকে ২-১ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় ভারত । ততদিনে ক্যান্সার ভালো মত বাসা বেধেছে, তাঁর ফুসফুসে । নয় মাস লড়াই করার পর অবশেষে ৬৩ সালে তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন । শেষ হয় ভারতীয় ফুটবলের শ্রেষ্ঠ অধ্যায় । সৈয়দ আব্দুল রহিমের জীবনের অজানা কাহিনী নিয়েই ময়দান সিনেমাটি তৈরি হয়েছে । সকলেরই জানা উচিত ভারতীয় ফুটবলের সেই স্বর্ণযুগের কাহিনী যার হাত ধরে রচিত হয়েছে সেইরহিম সাহেবের কথা।
: ৯ জন খেলে ড্র ইস্টবেঙ্গলের নৈতিক জয় ।কিন্তু এক পয়েন্টে খুশি নন অস্কার ব্রুজো। সমর্থকদের আবেগের সঙ্গে গা ভাসাতে...
Read more
Discussion about this post