বাংলার মসনদ দখলের পর থেকেই নানা প্রকল্প চালু করেছে শাসক দল তৃণমূল। যা নিয়ে বিরোধীদের কটাক্ষের শিকারও হতে হয়েছে ঘাসফুল শিবিরকে। তবুও সমস্ত কটাক্ষকে উপেক্ষা করে আমজনতার দিকে তাকিয়ে, ক্রমেই এগিয়ে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একে একে রাজ্যবাসীর জন্য এনেছেন নানান জনমুখী প্রকল্প। তার মধ্যে অন্যতম হল মহিলাদের লক্ষ্মীভাণ্ডার, খাদ্যসাথী, পড়ুয়াদের জন্য কন্যাশ্রী ও সবুজ সাথী, রূপশ্রী, কৃষকদের জন্য কৃষকবন্ধু প্রকল্প। এমনকি অর্থের অভাবে যাতে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু না হয়, তার জন্য স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প চালু করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। সম্প্রতি, ২৪ এর লোকসভা নির্বাচনের আগে রাজ্য সরকার একলাফে মহিলাদের লক্ষ্মীভাণ্ডারে ৫০০ টাকার জায়গায় ১০০০ টাকা করে দিয়েছে। এর ফলও এবারের লোকসভা নির্বাচনে পেয়েছে বলে অভিমত রাজনৈতিক মহলের। বিশেষ করে রাজ্যে পড়ে থাকা শিক্ষিত যুবক- যুবতীদের ভাতা দেওয়ার নামে ভিক্ষা দিয়ে চাকরি দেওয়া বন্ধ রেখেছে রাজ্য সরকার, বলে কটাক্ষের সুরে অভিযোগ বিরোধীদের। শুধু তাই নয়, চলতি নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হয়েই ২০১৯ সালে শুরু হওয়া কৃষকদের জন্য একটা জনকল্যাণমূলক প্রকল্প শুরু করেছিল রাজ্য সরকারের। যা কৃষকবন্ধু নামে পরিচিত। যেখানে চলতি বছর জুন মাসের ২৭ ও ২৮ তারিখ নাগাদ প্রকল্পের আওতাধীন কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা ঢোকা শুরু হবে বলে সূত্রের খবর।
কৃষকবন্ধুর আওতাধীন রাজ্যের প্রায় ৩০ লক্ষ কৃষক এই প্রকল্পে আর্থিক সাহায্য পেয়ে থাকেন। যেখানে এই প্রকল্পের আওতাধীন কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে বছরে দু-বার দুই কিস্তিতে একর প্রতি ৪ থেকে ১০ হাজার টাকা পাঠায়ে থাকে রাজ্য সরকার। তবে যারা এখনও পর্যন্ত এই প্রকল্পের সুবিধা পান নি, তাঁদের জন্য পুনরায় কৃষকবন্ধু প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত হতে চলেছে। স্থানীয় অফিস কিংবা অনলাইনের মাধ্যমে এই প্রকল্পের ফর্ম ফিলআপ করা যাচ্ছে। এই প্রকল্পে নাম নথিভুক্তকরণ কৃষকের বয়স যদি ১৮-৬০ বছর বয়সী হয়, সেক্ষেত্রে বেশ কিছু নিয়ম রেখেছে রাজ্য সরকার।
এক ঝলকে দেখে নেব, নিয়মগুলি…
প্রথমে আপনাকে কৃষকবন্ধুর ওয়েব সাইডে যেতে হবে। এরপর বেনিফিসারি লিস্টে ক্লিক করতে হবে। তারপরই একটি নতুন পেজ খুলবে। সেখানে আপনি জেলা, ব্লক ও গ্রামের নাম খুঁজে নিয়ে সাবমিট অপশনে গিয়ে ক্লিক করন। এরপরই আপনি দেখতে পাবেন এই প্রকল্পের আওতায় থাকা সুবিধাভোগীদের নামের তালিকা। সেখান থেকেই আপনাকে খুঁজে নিতে হবে আপনার নাম।
এরপর আসি, কীভাবে আপনি কৃষকবন্ধু প্রকল্পের স্ট্যাটাস চেক করবেন?
প্রথমে আপনাকে কৃষকবন্ধুর অফিসিয়ালি ওয়েবসাইটটি খোলার পর হোম পেজে রেজিস্ট্রার ফারমার ইনফরমেশন এ গিয়ে ক্লিক করতে হবে। এরপর আপনাকে মোবাইল মোবাইল নম্বর সিলেক্ট করে নিজের ফোন নম্বর বসাতে হবে। সবশেষে সার্চ অপশনে গিয়ে ক্লিক করলেই গ্হাকরা নিজের পেমেন্ট স্ট্যাটাস দেখতে পারবেন।।
এই প্রকল্পের আওতায় এলে আপনি কি কি সুবিধা পেতে পারেন?
আর্থিক সাহায্য– এক একর বা তার বেশি জমি থাকলে সেই জমির মালিক চাষিরা বছরে দুই কিস্তিতে ১০ হাজার করে টাকা পাবেন। অন্যদিকে, যাদের জমি এক একরের কম সেই সকল জমির মালিকরা বছরে দুই কিস্তিতে ৪ হাজার টাকা পেয়ে থাকেন।
জীবন বিমা– এই প্রকল্পের আওতাধীনরা জীবনবীমা বাবদ ২ লক্ষ টাকা পাবেন। যদি কোনও কৃষকের ১৮ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে মৃত্যু ঘটে, সেক্ষেত্রে তাঁর পরিবারের সদস্যরা এই টাকা পাবেন।
মূলত এই টাকা সরকারের তরফে দেওয়া হয় বছরের দুই সময়ে। একটি হল খারিফ শষ্যের অনুদান বাবদ আর অপরটি হল রবি শষ্যের অনুদান বাবদ। অর্থাৎ মে অথবা জুন মাসের মধ্যেই এই টাকা পেয়ে থাকেন কৃষকরা। ।
Discussion about this post