সম্প্রতি সুইজারল্যান্ডের দাভোস শহরে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের বার্ষিক সভা অনুষ্ঠিত হয়ে গেল। সেখানে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় বিজনেস টাইকুন, শিক্ষাবিদ এবং বিশ্ব নেতারা জড়ো হয়েছিলেন। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের বিভিন্ন আলোচনা সভায় গুরুত্ব পেয়েছিল মুদ্রাস্ফীতি বা অর্থনৈতিক উন্নয়নের মতো বিষয়গুলি। এছাড়া চতুর্থ শিল্প বিপ্লব ও জলবায়ু পরিবর্তনের মতো গুরুতর বিষয়েও আলোচনা হয়েছে বিশ্ব নেতাদের মধ্যে। কয়েকদিন ব্যাপী এই বিশাল কর্মযজ্ঞে দিনের বেলা যত আলো ঝলমলে ছিল, রাতের বেলা ছিল ততটাই অন্ধকারময় ও কদর্য। বিশ্বের প্রথমসারির সংবাদপত্র দি ডেইলি মেল একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যা নিয়ে তোলপাড় বিশ্ব রাজনীতি। ঠিক কি রয়েছে ওই প্রতিবেদনে? যা নিয়ে এত হইচই।
দি ডেইলি মেল দাবি করেছে এবারের ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে সবচেয়ে বেশি যৌনতা লক্ষ্য করা গিয়েছে। সুইজারল্যান্ডের বিখ্যাত পর্যটন কেন্দ্র দাভোস শহরের বিভিন্ন এসকর্ট সংস্থাগুলি মারফত ৩০০-র বেশি যৌনকর্মী বুক করা হয়েছিল। রাতের আঁধারে সেখানে অবাধ যৌনতায় মেতেছিলেন আগত অতিথিরা। উড়েছে কোটি কোটি টাকা। একক যৌনতা থেকে শুরু করে গ্ৰুপ সেক্স, পায়ু সঙ্গম পার্টি সবই ছিল ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের আড়ালে। এমনকি ট্রান্সওম্যানদের চাহিদাও ছিল বেশ ভালো। দি ডেইলি মেল দাভোস শহরের বিভিন্ন এসকর্ট সার্ভিস এজেন্সিগুলির বরাত দিয়ে দাবি করেছে প্রায় ১০ কোটি টাকার বেশি ব্যয় করা হয়েছিল যৌনকর্মীদের জন্য। যা অন্যান্য সময়ের থেকে কয়েকগুন বেশি।
প্রসঙ্গত, এবারের দাভোসের ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের তদারকি সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। জানা যাচ্ছে সেখানে তিনি সরকারিভাবে আমন্ত্রিত ছিলেন না। অর্থাৎ তাঁকে বাংলাদেশ সরকারের প্রধান হিসেবে ডাকা হয়নি, তাঁকে ব্যক্তিগতভাবে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম। বিখ্যাত সংবাদপত্র দি ডেইলি মেল এই প্রতিবেদন প্রকাশ করতেই চরম অস্বস্তিতে পড়েছেন মুহাম্মদ ইউনূস। এমনিতেই সুইজারল্যান্ডের দাভোস থেকে তিনি বিশেষ কিছু অর্থ সাহায্য আনতে পারেননি বাংলাদেশের জন্য। এমনকি বড় কোনও বিনিয়োগের মৌ স্বাক্ষরও করতে পারেননি তিনি। ফলে তাঁর ওই পাঁচ দিনের বিদেশ সফর নিয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক মহলে চর্চা শুরু হয়েছে। এরপর ডেইলি মেলের এই অস্বস্তিকর প্রতিবেদন সামনে আসায় আরও বিপাকে পড়েছেন মুহাম্মদ ইউনূস।
জানা যাচ্ছে, সাধারণত বুকিংয়ের পরে তা প্রকাশ না করার চুক্তিতে স্বাক্ষর করার জন্য তৈরি করা হয়েছিল বিশেষ চুক্তিপত্র। যৌনকর্মীদের তাতে স্বাক্ষর করতে হয়েছিল। এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে হাই প্রোফাইল ব্যক্তিরা ওই যৌনকর্মীদের সঙ্গে সঙ্গমক্রীড়ায় লিপ্ত হয়েছিলেন। যদিও এর ফলে হাজার হাজার ডলার উপার্জন করতে সক্ষম হয়েছিলেন ওই যৌনকর্মীরা। জানা যাচ্ছে, কিছু মহিলা একক বুকিংয়ের জন্য প্রায় ৬ হাজার পাউন্ড পেয়েছিলেন। যা ভারতীয় টাকার অঙ্কে প্রায় সাড়ে ছয় লক্ষ টাকা। দি ডেইলি মেল দাবি করেছে, এই ইভেন্টগুলিতে গড় বুকিং সময়কাল ছিল প্রায় চার ঘন্টা। অর্থাৎ প্রথম তিন দিনের মধ্যে মাত্র একটি ওয়েবসাইট থেকে বুকিংয়ের জন্য আনুমানিক প্রায় তিন কোটি টাকা খরচ হয়েছে৷ বাকি এজেন্সিগুলি মিলিয়ে ওই অঙ্ক পৌঁছেছে ১০ কোটি টাকায়। এর অর্থ, শুধুমাত্র যৌনতা এবং যৌনকর্মীদের জন্যই ১০ কোটি টাকার ব্যবসা হয়েছে সুইজারল্যান্ডের দাভোস শহরে। কি কি ধরণের ব্যবস্থা ছিল সেখানে? ওই প্রতিবেদনে সেটাও তুলে ধরা হয়েছে।
দি ডেইলি মেল জানাচ্ছে, এবার ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে আরও বেশি সেক্স পার্টি হয়েছে। ওই প্ল্যাটফর্ম থেকে মাত্র ৯০ জন গ্রাহকের দ্বারা ৩০০ টি এসকর্ট বুক করা হয়েছিল। আরও জানা যাচ্ছে, এবার অ্যানাল সেক্স বা পায়ু সঙ্গম পার্টির আবেদন ছিল সর্বাধিক। প্রসঙ্গত, সুইজারল্যান্ডে পতিতাবৃত্তি বৈধ, এবং যৌনকর্মীদের কর দিতে হয়। এর জন্যই ওই দেশে অবাধ যৌনতার চল। অপরদিকে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম এমন একটি প্ল্যাটফর্ম, যেখানে বিশ্বের তাবড় তাবড় বিজনেস টাইকুন থেকে শুরু করে নামী-দামি শিক্ষাবিদ, গবেষক এবং বিশ্ব নেতারা উপস্থিত ছিলেন। যেমন সেখানে ছিলেন মুহাম্মদ ইউনূসও। কিন্তু দি ডেইলি মেল কয়েকজন যৌনকর্মীর সাক্ষাৎকার প্রকাশ করেছে, যাতে এই নামী-দামী মানুষদের অন্ধকার দিক প্রকাশ পেয়ে গেল। এক যৌনকর্মীর বয়ান খুবই বেদনাদায়ক। তিনি দাবি করেছেন, এবারের ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে উপস্থিত গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নোংরা দিকটি তাঁরা দেখলেন। তাঁর আরও দাবি বিকৃত যৌন চাহিদা মেটাতে বড় বড় শিল্পপতি বা রাষ্ট্রনেতারা যৌনকর্মীদের উপর নির্মম যৌন নির্যাতন চালিয়েছে। এমনকি পায়ু সঙ্গম করতেও বাধ্য করা হয়েছিল। আবার সেটা প্রকাশ না করার জন্য চুক্তিপত্রে স্বাক্ষরও করিয়ে নেওয়া হয়। কিন্তু এসকর্ট এজেন্সির বিভিন্ন মডেল ও যৌনকর্মীরা চান এই বিষয়গুলি সবার সামনে আসুক। সেই কারণেই তাঁরা মুখ খুলছেন। যদিও তাঁদের ধারণা, এর জন্য তাঁরা বিপদে পড়তে পারেন, সেই কারণেই করোও নাম বা পদ তাঁরা প্রকাশ করছেন না। তবে, আলো ঝলমলে এবারের ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের নোংরা ও কদর্য দিকটিও জানতে পারলেন বিশ্ববাসী। যেখানে শুধুমাত্র যৌনতাকে উপভোগ করতে ১০ কোটির বেশি টাকা ব্যয় করা হয়েছিল।
Discussion about this post