পাকিস্তানের পরে এবার বড় ধাক্কা বাংলাদেশের! বাংলাদেশী অনুপ্রবেশ রুখে, ভারতের চাপে বাংলাদেশ। কাশ্মীরের নৃশংস হামলার ঘটনার পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কি কি কৌশলগত পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে ভারত তা দেখেছে গোটা বিশ্ব। এবার বাংলাদেশের বিরুদ্ধেও ভারতের কড়া পদক্ষেপ সাক্ষী হয়ে থাকলো বিশ্ব। জানা যাচ্ছে ভারতের তরফ থেকে বিশ্বজুড়ে যত বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারী আছে তাদেরকে ফেরত পাঠানো হবে মোহাম্মদ ইউনুসের বাংলাদেশে। সেটা আবার আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে!
বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এই কড়া পদক্ষেপ নিয়ে ভারত সরকার বুঝিয়ে দিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অফ লয়ের নিয়ম অনুসারে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকারীদের নিজেদের দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে বাধ্য ইউনুস সরকার। ঠিক যেমনটা দেখা গিয়েছিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প শপথ গ্রহণের পর যেভাবে অনুপ্রবেশকারীদের নিজেদের দেশে ফেরত পাঠিয়েছিলেন ঠিক একইভাবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পলিসি মেনেই এবার ভারত সরকারের এই নয়া পদক্ষেপ। তাতে বেজায় চাপ পড়তে হচ্ছে মোহাম্মদ ইউনুসকে।
এর আগে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ রিফিউজি মাইগ্রেশন রেজিলিউশনে স্বাক্ষর করেনি। কারণ জাতিসংঘের তরফের এই রেজুলেশনে ভারতকে চাপ দেওয়া হয়েছিল যে আশেপাশের বিভিন্ন রাষ্ট্র থেকে যে সমস্ত অনুপ্রবেশকারীরা আসবে তাদের প্রত্যেককে জায়গা দিতে বাধ্য থাকবে ভারত। সেই সময় ভারতের তরফে জাতিসংঘ কে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, ভারত তখনই এই সিদ্ধান্তে আসবে যখন তারা মনে করবে দেশের সুরক্ষার ক্ষেত্রে অনুপ্রবেশকারীরা নিরাপদ। অর্থাৎ এই অনুপ্রবেশকারীদের তরফ থেকে কোনরকম অপ্রীতিকর ঘটনার মুখোমুখি হতে হবে না ভারতকে।
আরেকবার সম্প্রতি যে তথ্য প্রমাণ ভারত সরকারের হাতে এসে পৌঁছেছে সেখানে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, ভারতে যে সকল বাংলাদেশ অনুপ্রবেশকারীরা রয়েছেন তারা দেশের জন্য একেবারেই নিরাপদ নয়। পাশাপাশি ভারতের সংগঠিত বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসবাদী হামলার সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে এই বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকারীরা।
উল্লেখ্য বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে উঠে এসেছে এক চাঞ্চল্যকর খবর। সম্প্রতি চারজন বাংলাদেশ অনুপ্রবেশকারকে গ্রেপ্তার করেছে ভারত আর তার মধ্যে দুজনই বাংলাদেশের আল-কায়েদা স্লিপার সেলের সঙ্গে যুক্ত বলে জানা গিয়েছে। অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে এই ধরনের অনুপ্রবেশকারীরা নিজেদের দেশেই থাকতে পারছেন না এবং তারা ভারতে এসে নাশকতার সৃষ্টি করার চেষ্টা চালাচ্ছে। ফলে ভারত বাংলাদেশ সীমান্তেও সেনাবাহিনীর নজরদারি আরও বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। কারণ ভারত বাংলাদেশ সীমান্তে স্থলভাগের বেশিরভাগ অংশের কাঁটাতারার বেড়া দেওয়া সম্ভব হলেও জলভাগে এই বেড়া দেওয়া সম্ভব হয়নি। সে ক্ষেত্রে সীমান্ত এলাকা উদ্বেগ বাড়াচ্ছে ভারতের। কিন্তু ভারত সরকারের সম্প্রতি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নয়া পদক্ষেপে আতঙ্কিত বাংলাদেশ সরকার।
ভারতের এই অ্যাকশন শুরু হতেই দেখা গেল আরও একটি করা পদক্ষেপ ভারতীয় পুলিশ বাহিনীর। ভারতের গুজরাটে এক হাজারের বেশি বাংলাদেশি নাগরিককে আটক করেছে পুলিশ। সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর , ভারতে অনুপ্রবেশ ও ভুয়ো কাগজপত্র ব্যবহার করে বসবাসের অভিযোগে তাদের আটক করা হয়।
গুজরাটের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হর্ষ সাংঘভির বরাত দিয়ে ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা পিটিআই এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, গুজরাটের আহমেদাবাদ থেকে কমপক্ষে ৮৯০ বাংলাদেশি ও সুরাটে ১৩৪ বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে গুজরাটে এখন পর্যন্ত এটিই বৃহত্তম অভিযান বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী হর্ষ সাংঘভি।
গুজরাটে বসবাসরত অবৈধ অভিবাসীদের পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এই নির্দেশ উপেক্ষা করে রাজ্যে অবৈধভাবে বসবাসকারী অভিবাসীদের গ্রেফতারের পর নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে অবৈধ অভিবাসীদের আশ্রয়দাতাদের বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন গুজরাট প্রশাসন।
একদিকে কাশ্মীরের পহেলগাঁও এ পর্যটকদের ওপর হামলার পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে ভারত, যার মধ্যে পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা বাতিল করে বেঁধে দেওয়া সময়সীমার মধ্যে দেশ ছাড়ার নির্দোষ দেওয়া হয়েছে। তারপরও কোনো পাকিস্তানি নাগরিক যেন এদেশে থেকে না যায়, তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে প্রতিটা রাজ্যকে। পাশাপাশি দেশে অবৈধভাবে বসবাসকারীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে বলেছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার।
Discussion about this post