পাকিস্তানের একটি বড় অংশ জলমগ্ন। কার্যত ভাসছে মুজাফফরাবাদ। ভারত পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে ঝিলাম নদীতে জল ছেড়ে দেওয়ার পর পাকিস্তান মুজাফফরাবাদে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে বলে খবর। পাকিস্তানি গণমাধ্যমগুলো দাবি করছে, ভারত হটাৎ করে জল ছেড়ে দিয়েছে কোনওরকম নোটিস বা সতর্কতা ছাড়াই। আর এর জেরে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে গিয়েছে। এর মধ্যে আবার বিশেষভাবে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, বাংলাদেশের কিছু গণমাধ্যমের বক্তব্য। তারা সরাসরি ভারতকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছে। তারা বলছে, ঝিলাম নদীর জলস্তর হঠাৎ করে বেড়ে গিয়েছে। ভারত আগাম কোনও খবর দেয়নি। অর্থাৎ বাংলাদেশ ফের ভারতের কাঁধে দোষ চাপাচ্ছে। তবে প্রশ্ন উঠছে, আসলে সত্যিই কি কোনও নোটিস ছাড়া ভারত জল ছেড়ে দিয়েছে? অন্যদিকে, একটি বিষয়ে স্পষ্ট হচ্ছে, পাকিস্তান ইচ্ছে করে ভারতের ইস্যুতে বাংলাদেশকে পাশে টানছে। শুধু তাই নয়, যৌথভাবে অভিযোগ করছে ভারতের বিরুদ্ধে। সিন্ধু জল বন্টন চুক্তি বাতিল করল, তখন একটি বাস্তবতা তৈরি হয়েছে। আগে নিয়ম ছিল, ভারত বাধ্য ছিল পাকিস্তানকে জানাতে হবে, কবে বাধ খুলবে, কবে জল ছাড়বে। কিন্তু এখন ভারত কোনও তথ্য সরবরাহ এর বাধ্য বাধকতা মেনে চলে না। ফলে পাকিস্তান যদি আগে থেকে কোনও নোটিস বা পায় সেটা ভারতের কোনও দায়ভার নেই। তবে এই মুহূর্তে পাকিস্তানের বেশ কিছু ভয়ঙ্কর ছবি সামনে এসেছে। দেখা যাচ্ছে, pok er মধ্যে দিয়ে বয়ে চলা ঝিলাম নদী কিভাবে আতঙ্কের রূপ নিয়েছে। ঝিলাম নদী আসলে ভারত উৎস্য হয়ে পাক অধিকৃত কাশ্মীর দিয়ে বয়ে চলে। সেই নদী এখন ভয়ংকর রূপ নিয়েছে। কার্যত সেখানে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি করেছে। সেখানে বহু মানুষ বাঁচার জন্য লড়াই করছে। এই সুযোগে পাকিস্তানের বহু মিডিয়া ভারতকে শুরু করেছে দোষ দিতে।
ভারতে উৎপন্ন হওয়া ৬ টি নদী পাকিস্তানের ভিতর দিয়ে বয়ে গিয়ে আরব সাগরে পড়েছে। সেই নদীগুলির নাম রাবি, বিপাশা, ইন্দাস বা সিন্ধু, শতদ্রু, ঝিলাম ও চেনাব। সিন্ধু নদী ব্যবস্থা এই ছয়টি নদীর জল কিভাবে কোথায় যাবে, বিষয়টি নিয়ে গঠিত। যার মধ্যে তিনটি নদী, সিন্ধু, ঝিলাম, চেনাব … এরা ভারতে উৎপন্ন হয়ে পাকিস্তানের মধ্যে দিয়ে প্রভাবিত হয়েছে। ঝিলাম নদীটির উৎস ভারতের জম্মু কাশ্মীরে। যেখানে প্রবাহিত হয়ে pok এর ভিতর দিয়ে পাকিস্তানের মূল ভূখণ্ডে প্রবেশ করে। এবং সেখানে জল সরবরাহ করে। ঝিলাম কে ধীlরা হয় ওয়েস্ট এন্ড ডিফারের অন্তর্গত। যেটার উপর পাকিস্তান খুবই স্পর্শকত। ১৯৬০ সালে যখন সিন্ধু জল বন্টন চুক্তি স্বাক্ষর হয়, তখন ঠিক হয় সিন্ধু, ঝিলাম, চিনাব বেশিরভাগ অধিকারী থাকবে পাকিস্তান। ঝিলাম নদীর জল ধারণ ব্যবহার করতে পারে সীমিতভাবে। ফলে সেখানে বিদ্যুৎ, এবং সেচ ব্যবহারের জন্য জল ব্যবহার করে থাকে। ২০১৮ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী কৃষণগঞ্জে হাইড্র পাওয়ার প্রজেক্ট জম্মু-কাশ্মীরে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন। এই প্রজেক্ট সরাসরি ঝিলাম নদীর উপর তৈরি হয়। পাকিস্তান এই প্রজেক্টের প্রবল বিরোধিতা করে। এমনকি এই ইস্যুটি নিয়ে তারা বিশ্ব ব্যাংক পর্যন্ত টেনে নিয়ে আসার চেষ্টা করা হয়েছিল।এই হাইড্রো প্রজেক্টের মাধ্যমে জল স্টোর করার ক্ষমতা অর্জন করেছে ভারত। যেটা নাকি আগে ছিল না। আর এটাতে পাকিস্তানের চিন্তা বেড়েছে। এখন ভারত চাইলেই ঝিলাম নদীর জল আটকে দিতে পারে। এখন যে পরিস্থিতি পাকিস্থানে তৈরি হয়েছে, তাতে পাকিস্তান ভয় পেয়েছে। এখন জল পুরোপুরি বন্ধ করলে তারা কি খাবে, সেটা নিয়ে চিন্তা তৈরি করবে পাকিস্তানকে। তবে অনেকে বলছে, সবে শুরু, এখন কি করে ভারত সরকার, সেটাই দেখার।
Discussion about this post