আর জি কর হাসপাতালে তরুণী ডাক্তার ছাত্রীকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় সুপ্রিম কোর্টের স্বতঃপ্রণোদিত মামলার শুনানির হয় মঙ্গলবার। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় দেশের ডাক্তারদের সুরক্ষা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন। শুনানি শুরুতেই প্রধান বিচারপতি বলেন, এই ঘটনাটি মাত্র একটি হাসপাতালে নির্দিষ্ট একটি ধর্ষণের বিষয় আর নেই। দেশজুড়ে তামাম ডাক্তারদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তার সঙ্গে জড়িত ব্যবস্থাগত সম্পর্ক জড়িয়ে গিয়েছে। এদিনের শুনানিতে চিকিৎসকদের নিরাপত্তায় টাস্ক ফোর্স গঠনের নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। সাতজনের জাতীয় টাস্ক ফোর্স গঠনেরও নির্দেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা ও বিচারপতি মনোজ মিশ্রের ডিভিশন বেঞ্চ। টাস্ক ফোর্স মূলত দু’টি বিষয়ে পরিকল্পনা করবে: প্রথমত, নারী পুরুষ নির্বিশেষে চিকিৎসা পেশায় হিংসা রুখতে হবে। দ্বিতীয়ত, নিরাপদ কাজের পরিবেশের জন্য একটি প্রটোকল তৈরি করতে হবে।
এছাড়াও দ্রুত আরজি কর হাসপাতালে নিরাপত্তার জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে হবে। মঙ্গলবার থেকেই আরজি কর হাসপাতালের নিরাপত্তায় থাকবে CIFS। আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে স্ট্যাটাস রিপোর্ট জমা দিতে বলেছে শীর্ষ আদালত। এছাড়াও এ দিনের শুনানিতে উঠে আসে বেশ কিছু তাৎপর্যপূর্ণ দিক। হাসপাতাল ভাঙচুরের ঘটনায় কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, তা নিয়েও বৃহস্পতিবার রিপোর্ট দেবে রাজ্য। পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। প্রধান বিচারপতি বলেন, “প্রথমে ঠিক ভাবে এফআইআর করা হয়নি। পুলিশ কী করছিল? একটা হাসপাতালের মধ্যে এত বড় ঘটনা ঘটে গেল। পুলিশ কি হাসপাতাল ভাঙচুর করার অনুমতি দিচ্ছিল?” অপরাধের জায়গা সুরক্ষিত রাখার দায়িত্ব ছিল পুলিশের বলে মন্তব্য প্রধান বিচারপতির। এফআইআরও দেরি করে দায়ের করা হয়েছে। কেন এফআইআর করতে দেরি হল, এই প্রশ্ন তুলেছে সুপ্রিম কোর্ট। অভিযোগ উঠেছে, তথ্যপ্রমাণ লোপাটের চেষ্টা হয়েছে।
অধ্যক্ষ এটিকে আত্মহত্যা বলে চালাতে চেয়েছিলেন। এমনকি পরিবারকে মৃতদেহ দেখতে দেওয়া হয়নি। রাজ্যের আইনজীবী আদালতে জানান, এই অভিযোগগুলি সম্পূর্ণ সঠিক নয়। সে কথা শুনে প্রধান বিচারপতি বলেন, “এটি পরিষ্কার যে খুন করা হয়েছে। প্রথমে এফআইআরে কি তা উল্লেখ ছিল? প্রধান বিচারপতি কড়া সুরে বলেন, প্রিন্সিপাল কী করছিলেন?
প্রধান বিচারপতি জানতে চান, আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষকে সাসপেন্ড করা হয়েছে কি না! জবাবে রাজ্য জানায়, তাঁকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ কী করছিল, গুরুতর অপরাধ হয়েছে। হাসপাতালের মতো জায়গায় অপরাধ সংঘটিত হয়েছে সবাই কী করছিল! আগামী ২৩ অগস্ট এই মামলার পরবর্তী শুনানি। পাশাপাশি দেশ জুড়ে আন্দোলনরত চিকিৎসকরা যাতে কাজে ফেরেন তার অনুরোধ করেন প্রধান বিচারপতি।
Discussion about this post