আমেরিকার পররাষ্ট্র দপ্তরের তরফে আবারও বাংলাদেশের মানবাধিকার ও বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সেখানে বাংলাদেশের মানুষের মানবাধিকার সমুন্নত দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি বলেছে, বাংলাদেশে আগের সরকারের সময় মানবাধিকার প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান যা ছিল, বর্তমান সরকারের সময়ও সেটাই আছে। ২০ নভেম্বর মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা জানিয়েছেন দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার। ম্যাথু মিলারকে প্রশ্ন করে বলেন, ‘বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের একটি সশস্ত্র সংগ্রামের প্রস্তুতি বিষয়ক দাবি সম্পর্কে আপনার কাছে কি কোনো তথ্য বা মূল্যায়ন আছে? এ ছাড়া অস্ত্রের সম্ভাব্য উৎস সম্পর্কে বা ওই অঞ্চলের স্থিতিশীলতার জন্য এই ধরনের বক্তব্যের প্রভাব সম্পর্কে উদ্বেগ আছে?’ তবে তার প্রশ্নের জবাবে ম্যাথু মিলার বলেন, ‘আমি এ ধরনের কোনো বক্তব্য মোটেও দেখিনি। এটা নিয়ে আমি কোনো মন্তব্য করব না।’ বাংলাদেশে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে চরমপন্থার বাড়বাড়ন্ত এবং সংখ্যালঘুদের উপরে নির্যাতন নিয়ে ফের গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করল আমেরিকার হবু প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শিবির। প্রথম দফায় দক্ষিণ এশিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তা লিসা কার্টিস মন্তব্য করেছেন, শেখ হাসিনাকে উৎখাতের ফলে বাংলাদেশ ‘গুরুত্বপূর্ণ একটি সন্ধিক্ষণে এসে দাঁড়িয়েছে, যা তাদের ভবিষ্যৎকে নিয়ন্ত্রণ করবে’। চরমপন্থী, মৌলবাদী এবং জঙ্গিদের নিয়ন্ত্রণে শেখ হাসিনা ‘প্রশংসনীয়’ দায়িত্ব পালন করেছিলেন বলেও সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মন্তব্য করেছেন কার্টিস। বাংলাদেশ নিয়ে আমেরিকার বাইডেন সরকার এবং ট্রাম্পের মধ্যে গুরুতর মতভেদের বিষয়টি আগেও সামনে এসেছে। শেখ হাসিনা অভিযোগ করেছেন, বাইডেন প্রশাসনই গণঅভ্যুত্থান ঘটিয়ে তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশের আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটিয়েছে। এছাড়াও শিরোনামে রয়েছে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ। ইন্দো-আমেরিকান গোষ্ঠী বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর অত্যাচারের প্রতিবাদে ঢাকার উপর আর্থিক অবরোধ জারির চাপ সৃষ্টি করছে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। আগামী বছরে ক্ষমতায় বসতে চলা ট্রাম্প প্রশাসন যাতে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর নির্যাতন ঠেকাতে কড়া পদক্ষেপ নেয় তার জন্য তোড়জোড় চালাচ্ছে মার্কিন-ভারতীয় গোষ্ঠী। মার্কিন কংগ্রেসে এজন্য আর্থিক অবরোধ জারি সহ বিভিন্ন পদক্ষেপের প্রস্তাব আনার জোর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক ডাক্তার ভরত বরাই এনিয়ে তৎপর হয়েছেন। বরাই সেদেশের ভারতীয়-আমেরিকান গোষ্ঠীর একজন প্রভাবশালী কর্ণধার। তিনিই ভাবী ট্রাম্প প্রশাসনের কাছে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য তৎপরতা শুরু করেছেন। ভারতীয়-আমেরিকানদের দাবি, বাংলাদেশের উপর নতুন সরকার আর্থিক অবরোধ তৈরি করুক। ইউএস কমিশন অন ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডম-এর প্রাক্তন কমিশনার জনি মুর বলছেন, আমেরিকার বাইডেন সরকার বাংলাদেশের প্রতি সেভাবে মনোযোগই দেয়নি। এই সময়টা শুধু বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের জন্যই নয়, গোটা দেশের অস্তিত্বের জন্য হুমকিস্বরূপ। তবে এবার এই বিষয়টিতে নজর দেবেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর সেরা টিমটা নিয়েই দায়িত্ব নিতে চলেছেন। তাঁর টিম আমেরিকানদের মূল্যবোধের প্রতিনিধি। তারা ভারতকে বন্ধু হিসেবে দেখে। আমি এটা ভেবে অবাক হয়ে যাচ্ছি যে, বর্তমান আমেরিকান সরকার বাংলাদেশের দিকে তেমন মনোযোগই দেয় না। কিন্তু বাস্তবটা এটাই যে আমেরিকায় সরকার বদল হতে চলেছে। এই সরকারের বিদেশনীতি অনেক বেশি ভাল হবে। তাই আমি এটুকু বলতে পারি যে, ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে ফিরে আসছেন। আমেরিকান মূল্যবোধ নিয়ে তাঁর দল একটি সুন্দর, ভাল ভবিষ্যতের জন্য কাজ করবে। ট্রাম্পের এই টিম ভারতকে গুরুত্বপূর্ণ মিত্র হিসেবে দেখে। বর্তমানে বিশ্বজুড়ে ৫০টিরও বেশি যুদ্ধ চলছে।’ মুরের এই প্রতিক্রিয়া এমন একটা সময় এল যখন বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে গোটা পশ্চিমী দুনিয়া মুখে কুলুপ এঁটে বসে আছে। তিনি বলেন, সেদেশে যখন হিন্দুরা নির্যাতিত হচ্ছেন, তখন মাত্র কিছু আওয়াজ উঠেছে প্রতিবাদের। এটার বদল হওয়া উচিত। এটা এমন একটা সময় যখন ধর্মীয় স্বাধীনতা ও মানবাধিকার রক্ষার জন্য সকলের উঠে দাঁড়ানো উচিত। মুরের কথায়, এটা একটা ঐতিহাসিক ক্ষণ যখন বিশ্ব মুখ ফিরিয়ে থাকতে পারে না।
বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, যিনি শেখ হাসিনা পরবর্তী সময়ে দেশের শাসনভার হাতে নিয়েছিলেন। যদিও কয়েকঘন্টার সেই শাসনকাল এখন রাজনৈতিক আলোচনার...
Read more
Discussion about this post