ভারত পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধের আবহ। অন্তত গোটা বিশ্ব দরবারে তেমনই আখ্যা দেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যেই পহেলগাঁওয়ে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার প্রতিশোধ নিয়েছে ভারত। পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরে নটি জঙ্গি খাতে উড়িয়ে দিয়েছে ভারতীয় সেনা ও বায়ু সেনা। এখনো পর্যন্ত খবর, ৭০ জন জঙ্গি নিহত হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে জইশ ই মহম্মদের কুখ্যাত জঙ্গি মাসুদ আজাহারের পরিবার ও তার সহযোগী। আর দুই প্রতিবেশী দেশের উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে বাংলাদেশকে কি টার্গেট করা হচ্ছে? এই প্রশ্নটা উঠছে। তার কারণ এই উত্তেজনার মধ্যে ভারত থেকে বাংলাদেশী বলে অনেককে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে, আবার অন্যদিকে সরকারের কোনও কোনও উপদেষ্টা বা ছাত্র সমন্বয়কদের মধ্যে কেউ কেউ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য ঐক্যবদ্ধ থাকার জন্য বলছেন। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান তিনি পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেছেন, ভারত থেকে জোর করে মানুষদের প্রবেশ করার খবর পাওয়া যাচ্ছে। বাংলাদেশের নাগরিক হলে সেটা আনুষ্ঠানিকভাবে জানাতে হবে। এই ধরনের ঘটনা গ্রহনযোগ্য নয়। নয়া দিল্লির কাছে বিষয়টির ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ভারত সীমান্তে জোরপূর্বক প্রবেশের বিষয়টি দিল্লির নজরে আনা হয়েছে। তাদের স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, বাংলাদেশের নাগরিক হলে আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জানাতে হবে। এমনকি তিনি জানিয়েছেন, ভারতের পুশ ইন এর ব্যাপারে বাংলাদেশ আলাদাভাবে যাচাই করছে। ভারত পাকিস্তান দুই দেশের উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে কুড়িগ্রাম এবং আরো একটি সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে ২৪ ঘন্টায় প্রায় শতাধিক মানুষকে পুশ ইন করা হয়েছে। এই তথ্য পাওয়া গিয়েছে বিজিবির মাধ্যমে। এখানেই খলিলুর রহমান বলছেন, যদি তারা বাংলাদেশী নাগরিক হয়, তাতে আমাদের কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু যে পদ্ধতিতে পাঠানো হচ্ছে সেটা একেবারেই ঠিক নয়।
অন্যদিকে ভারত যে রাতে পাকিস্তানের ওপর হামলা চালালো, সেদিন বাংলাদেশের ছাত্রনেতা আসিফ মোঃ সজীব ভূঁইয়া ফেসবুকে লিখেন, সর্বভৌমত্ব রক্ষায় প্রয়োজন শক্তিশালী জাতীয় ঐক্য এবং সংহতি। অন্যদিকে জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ ঐক্যের বার্তা দিয়ে লেখেন, সর্বভৌমত্বের জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। একই দিনে জাতীয় নাগরিক পার্টির অন্য আর এক নেতা সারজিস আলম জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে সার্বভৌমত্ব রক্ষায় পোস্ট করেন। তিনি লে খেন, মাতৃভূমির নিরাপত্তায় এবং সর্বভৌমত্ব রক্ষায় ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে আমরা ঐক্যবদ্ধ।
এখানেই প্রশ্ন উঠছে, প্রত্যেকে একসঙ্গে মিলে একই ধরনের কথা কেন বলছেন? এর পিছনে কারণ টা ঠিক কি? তবে কি বিশেষ কিছু চলেছে? যেটা নানা জায়গা থেকে গুঞ্জন উঠে আসছে? এমনকি এদের মধ্যে কেউ কেউ সেভেন সিস্টার দখলের হুমকি পর্যন্ত দিয়েছে ভারতকে।
সম্প্রতি ভারত পাকিস্তানের উত্তেজনা পরিস্থিতির মধ্যে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস, যুদ্ধের প্রস্তুতির কথা বলেছেন। অনেকে বলছেন, ইউনুস অহেতুক মন্তব্য করেননি। অনেকে বলছেন, ভারত পাকিস্তানের যুদ্ধ অবস্থা তৈরি হলে, সেই প্রভাব পড়তে পারে বাংলাদেশে। সেই আশঙ্কা থেকেই তিনি বলেছেন। আবার অনেকে বলছে, কিছুদিন আগেই বাংলাদেশের প্রাক্তন সেনা করতাম বলেছেন, ভারত পাকিস্তানের উপর হামলা চালালে, আমাদের উচিত ভারতের সেভেন সিস্টার দখল করা। অর্থাৎ এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ পাকিস্তানকে সমর্থন করছে। এবং তাদের সহযোগী হয়ে ভারতের সঙ্গে যুদ্ধে নামার কথা ভাবছে বাংলাদেশ। তবে কি বাংলাদেশ এই যুদ্ধটা চাইছে নাকি ভারত এই যুদ্ধে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে? উঠে আসছে একাধিক প্রশ্ন।
Discussion about this post