ভারতের সন্ত্রাসবাদী হামলার নিশানায় পাকিস্তান তার বিরুদ্ধে এবার সামরিক তৎপরতা শুরু করেছে ভারতীয় সেনা। ভারত পাক সীমান্তবর্তী অঞ্চল ও নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর সামরিক অভিযান লক্ষ্য করা যাচ্ছে ভারতের। ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর সভাপতিত্বে সর্বদল বৈঠকে পর এবার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর একটি রুদ্ধদ্বার বৈঠক সম্পন্ন হয়েছে ।
উল্লেখ্য কাশ্মীরের পহেলগাঁও এ ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য গৃহীত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলি সম্পর্কে প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে অবহিত করার পরই এই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়েছে। তাই এই বৈঠকে যে ভারত সন্ত্রাসবাদীর বিরুদ্ধে নতুন কোন কৌশল উদঘাটন করবে তা বলাই যায়। অর্থাৎ এবার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আক্রমণের ব্লুপ্রিন্ট হাতে পেয়ে গিয়েছে ভারত বলেই অভিমত বিশেষজ্ঞদের।
ভারতের সন্ত্রাসবাদী হামলার পর থেকেই পহেগাও এর বৈসরণ ভ্যালি অর্থাৎ ঘটনাস্থলে অবস্থান করছে নিরাপত্তা বাহিনী এবং প্রমাণ অনুসন্ধান জোরদার করেছে তারা। এছাড়াও, ভারতীয় সেনাবাহিনী উচ্চ সতর্কতায় রয়েছে, পহেলগাঁও এ হামলার পর সন্ত্রাসীদের নিষ্ক্রিয় করার জন্য বেশ কয়েকটি অনুসন্ধান অভিযান শুরুও করা হয়েছে।
এই ভয়ংকর সন্ত্রাসবাদী হামলার পরই তৎপরতার সঙ্গে, নিরাপত্তা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি হামলার বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বৈঠক করে, এর তীব্র নিন্দা জানায় এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করে।
নিরাপত্তা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি-কে দেওয়া ব্রিফিংয়ে সন্ত্রাসী হামলার আন্তঃসীমান্ত সংযোগ তুলে ধরা হয়। উল্লেখ করা হয়েছে যে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে নির্বাচনের সফল আয়োজন এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের দিকে এর অবিচল অগ্রগতির প্রেক্ষাপটে এই আক্রমণটি করা হয়েছে।
এরপর থেকে, ভারত ইসলামাবাদে অবস্থিত ভারতীয় হাইকমিশন থেকে তাদের প্রতিরক্ষা, নৌ এবং বিমান উপদেষ্টাদের প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সংশ্লিষ্ট হাইকমিশনের এই পদগুলি বাতিল বলে গণ্য করা হবে। উভয় হাইকমিশন থেকে পরিষেবা উপদেষ্টাদের পাঁচজন সহায়ক কর্মীকেও প্রত্যাহার করা হবে। ১মে ২০২৫ থেকে কার্যকর হবে, আর এই হ্রাসের মাধ্যমে হাই কমিশনের সামগ্রিক সংখ্যা বর্তমান ৫৫ থেকে কমিয়ে ৩০ করা হবে।
প্রসঙ্গত, সীমান্তে অবশ্য প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে ভারতীয় সিনার । সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন করা পাকিস্তানের গোলাগুলির পাল্টা জবাব দিয়ে চলেছে ভারত। আরব সাগরে যুদ্ধজাহাজ আইএনএস সুরাট থেকে ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালিয়েছে ভারতীয় নৌসেনা। তবে বিশেষজ্ঞদের অনুমান, সম্ভাব্য প্রত্যাঘাতে প্রথমে সার্জিকাল স্ট্রাইকের পথে না হেঁটে ভারতের তরফে আকাশপথে প্রত্যাঘাতের সম্ভাবনাই বেশি৷ এ ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হতে পারে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর ড্রোন।
নিয়ন্ত্রণরেখার কাছাকাছি অবস্থিত টার্গেটে আঘাত করার ক্ষেত্রে এই ড্রোন ব্যবহার করলে যুদ্ধবিমানের থেকে ঝুঁকি অনেক কম। ভারতের হাতে থাকা অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সামরিক ড্রোনগুলি অনায়াসে কয়েকশো কিলোমিটার পাড়ি দিতে পারে৷ ফলে পাক–অধিকৃত কাশ্মীরের কোনও টার্গেটকে নিশানা করার ক্ষেত্রেও এগুলি কার্যকর হতে পারে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনার জন্য রবিবার চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ এবং বিএসএফের ডিজির সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠকও সেরেছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। সেক্ষেত্রে কূটনৈতিক ভাবে পাকিস্তানের উপর চাপসৃষ্টির জল্পনাও জোরদার হচ্ছে।
Discussion about this post