হঠাৎ করে পট পরিবর্তন। পাকিস্তান সরকার এইবার দাবি করল, তারা যুদ্ধ চায় না। তারা ভারতের সঙ্গে আলোচনা চায়। এবং তারা নাকি কাশ্মীরের এই ঘটনায় তদন্ত চায়। তারা কি ভয় পেয়ে গেল? যখন ভারতের নেভি, ইন্ডিয়ান এয়ারফোর্সের মাধ্যমে বিভিন্ন তথ্য সামনে আনা হচ্ছে তখন তারা এই ধরনের কথা বলছে। ফলে নিশ্চিতভাবে বুঝিয়ে দিতে সক্ষম হলেন, যুদ্ধের আগেই তারা হারতে শুরু করেছে। এদিকে দেখা গিয়েছে, একের পর এক মন্ত্রীরা পাকিস্তান থেকে হুশিয়ারি দিচ্ছিল। পাকিস্তানের রেলমন্ত্রীর থেকে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। যেখানে প্রকাশ্যে ১৩০ টি নিউক্লিয়ার এয়ার হেড ভারতের দিকে তাক করা আছে। তিনি বলেছিলেন, যদি সত্যিই সিন্ধু জল বন্টন চুক্তি বাতিল হয়ে যায়, তবে এগুলিকে ব্যবহার করা হবে। তিনি এক একটি মিসাইলের নাম ধরে বলেছেন এগুলি দীর্ঘদিন ধরে রাখা রয়েছে ভারতের জন্য। এমনকি তিনি বলেছেন, পাকিস্তানের আকাশ সীমা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ভারতের জন্য। এর জন্য নাকি ভারতের একের পর এক বিমান সংস্থাগুলি বন্ধ হয়ে যাবে। এই বিষয়ে কি বলেছিলেন তিনি শুনুন
অর্থাৎ একের পর ভারতকে হুশিয়ারি দিয়েছিলেন। এবং তিনি ভারতের সঙ্গে যুদ্ধ চ্য়েছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করে কেন এই ধরনের পালটি খেলেন?
ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর একের পর এক দেশের সঙ্গে বৈঠক করছেন। এই মুহূর্তে ভারতের পাশে রয়েছে আমেরিকা, রাশিয়া, ফ্রান্স, ইসরায়েলের মতো শক্তিধর দেশ গুলি থেকে ১০০ টির বেশি দেশ ভারতের পাশে। ভারত সিন্ধুর জল বন্টন চুক্তি বাতিল করে দিতে পাকিস্তান বুঝে গিয়েছে ভারত এবার খুব কড়া পদক্ষেপ করতে শুরু করেছে তাদের বিরুদ্ধে। যেটা তারা এর আগে কখনো করেনি। ১৯৬৫ সালের যুদ্ধতেও সিন্ধু জল বন্টন চুক্তি অটুট ছিল, ১৯৭২ সালের যুদ্ধিতেও সেটা দেখা গিয়েছে। কার্গিল যুদ্ধের সময়ও এই চুক্তিতে হাত দেয়নি ভারত। কিন্তু এইবার সেটা করে দেখালো ভারত।
অন্যদিকে পাক রেলমন্ত্রী পাকিস্তানের সমস্ত রেল পরিকাঠামো থেকে রেলের যাবতীয় বিষয় পাক আর্মির হাতে তুলে দিয়েছেন। অর্থাৎ পাকিস্তান সরকার ভয় পাচ্ছে, কোনও না কোনও ক্ষেত্রে সেইটাই পাকিস্তান সরকারের ওপর আসতে চলেছে। আর এর জেরে পাকিস্তানের সাধারণ মানুষ পাক সরকারের দিকে আঙুল তুলবে। তাই আগেভাগেই এই সর্তকতা। অন্যদিকে ভারত একাধিক দেশকে বোঝাচ্ছে, জঙ্গিবাদ বা সন্ত্রাসবাদ নির্মূল করতে হবে। এমনকি তারা সেটা করতে এতটাই বদ্ধপরিকর, যেখানে দেখা যাচ্ছে অজিত দোভাল এবং এস জয়শঙ্করার ব্রাজিল সফর যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেটি তারা বাতিল করে দিয়েছে। পরিবর্তে তারা, একাধিক দেশের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করছেন। এই পরিস্থিতিতে রাশিয়া তরফে একটি বিস্ফোরক ঘটনা নাকি ঘটতে পারে। কিছু বছর আগের রাশিয়াতে ক্রকস অ্যাটাক হয়েছিল। আর সেই ঘটনার জেরে ১৫০ জনের উপর রাশিয়ান মারা যান। এই ঘটনার দায় পাকিস্তান সরকারের দিকে ঠেলে দিতে পারে রাশিয়া। রাশিয়া তাদের নিজেদের দেশের নাগরিক যাতে পাকিস্তান না যায়, তেমন বলা হয়েছে। অর্থাৎ রাশিয়া পরিষ্কার করে বুঝিয়ে দিয়েছে, তারা ভারতকে প্রকাশ্যে সমর্থন করতে পারে। এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান এখন কোথায়, সেই নিয়ে প্রশ্ন চিহ্ন তৈরি হয়েছে। যদিও একটি ছবি প্রকাশ করা হয়েছে, যেখানে সেনাপ্রধান উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু অনেকে বলছেন এটা পুরনো ছবি। অনেকে বলছেন, সেনাপ্রধান লুকিয়ে আছেন। এবং ভারতের বিরুদ্ধে কোনও বড় ষড়যন্ত্র করছেন। এই মুহূর্তে পাকিস্তান সরকার চাইছে, ভারতের ক্ষতি করতে। কিন্তু পাল্টা ভারত যে ছক কষছে, তাতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বহু দেশ চলে গিয়েছে। এবং এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের যদি তাড়াহুড়ো করে কোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে তবে সেটি আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত হতে পারে পাকিস্তানের জন্য। বলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। আন্তর্জাতিক তরে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তবে কি ভারত পাকিস্তানের যুদ্ধ শুরু হয়ে গেল? কিন্তু ভারত এত সহজে হয়তো যুদ্ধে নামবে না। কারণ এতে ভারতের অনেক কিছু হারানোর সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচ করে যুদ্ধে নামাটা এখন অযৌক্তিক। তবে মোদী সরকার যে করা পদক্ষেপ করছে, সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। যুদ্ধে নামলে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ভারত। আর এতে সরাসরি মদত যোগাচ্ছে চীন। এই মুহূর্তে আমেরিকা এবং চীনের মধ্যে লড়াই চলছে বিশ্বে বাণিজ্যে। কি চাইতো ভারতের বাণিজ্যিক মার্কেট টাকে ধরে রাখতে। অন্যদিকে আমেরিকা ভারতের সঙ্গে এগ্রিমেন্ট এ চলে গিয়েছে। ফলে চীনের সঙ্গে তেমন ভারতের তেমন কিছু ক্ষেত্র নেই। অনেকদিন পাকিস্তান কে ব্যবহার করে ভারতের বিরুদ্ধে আরও উসকে দিতে পারে। চীনের কথাতেই কোনও না কোনও ক্ষেত্রে ভারতে অ্যাটাক করে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে পাকিস্তান। অর্থাৎ একটা বৃহৎ রাজনৈতিক খেলা চলছে। এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তান থেকে একটি বিবৃতি এসেছে। সেখানে বলা হয়েছে তারা ভারতের সঙ্গে যুদ্ধ করতে চাইছে না। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এই ঘটনা তদন্ত যায়। আমরা এর সঙ্গে জড়িত না। এখানেও পাকিস্তান থেকে বিবৃতি আসছে, যে নানাভাবে বলা হচ্ছে পাকিস্তানি জঙ্গিদের আশ্রয় দেওয়া হয়, সেগুলি একেবারে ভুল। এমনকি লস্করের নেতারা জেলে রয়েছে কিংবা গৃহবন্দী হয়ে রয়েছে। এরপরেও যদি কোনও রকম অভিযোগ আসে, তবে তারা ব্যবস্থা নেবে। অর্থাৎ পাকিস্তান ভয় পেয়েছে। তারা বুঝে গিয়েছে, ১০০ টির ও বেশি দেশ তাদের বিপক্ষে চলে গিয়েছে। কাজেই সেটা আয়ত্তে রাখতে এই মন্তব্য।
Discussion about this post