এক তৃণমূল প্রার্থী গাড়ি থেকে নামিয়ে দিলেন, আরেক তৃণমূল প্রার্থী আমন্ত্রণ জানিয়ে তার প্রচারে ডেকে নিলেন। যে কাঞ্চনকে ভোট প্রচারের গাড়ি থেকে নামিয়ে দিয়েছিলেন শ্রীরামপুরের তৃণমূল প্রার্থী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, সেই কাঞ্চনকে সঙ্গে নিয়েই লোকসভা ভোটের প্রচার করলেন ঘাটালের তৃণমূল প্রার্থী দেব। বিপুল জনসমাগমের সামনে দুজন সেলফি তুলে সেই ছবি instagram-এ পোস্ট করেন দেব। সোশাল মিডিয়ায় শেয়ার করে লেখেন, ‘এমনি’।
কিন্তু ভোট আবহে ‘ এমনি ‘ ‘ এমনি ‘ তো কিছু হয় না। মনে করা হচ্ছে, এই এক ছবিতেই শ্রীরামপুরের প্রার্থী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিশেষ বার্তাটি দিয়ে দিলেন তৃণমূলের তারকা প্রার্থী।সম্প্রতি ভোট প্রচারে কাঞ্চনকে সঙ্গে নিয়ে যেতে চাননি শ্রীরামপুরের তৃণমূল প্রার্থী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। কাঞ্চন গেলে গ্রামের মহিলারা ‘রিঅ্যাক্ট’ করছেন বলে তৃণমূল বিধায়ককে গাড়ি থেকে নেমে যেতে বলেন কল্যাণ। কোনও বাক্য খরচ না করে গাড়ি থেকে নেমে কোন এক দলীয় কর্মীর বাইকে করে সোজা এলাকা ছেড়ে বেরিয়ে যান উত্তরপাড়ার বিধায়ক। এ বিষয়ে কাঞ্চনের স্ত্রী তথা অভিনেত্রী শ্রীময়ী চট্টরাজ বলেন, “কল্যাণবাবুর এই ব্যবহারে কাঞ্চন হতাশ। স্বাভাবিকভাবেই ওর খারাপ লেগেছে।”
এই অবস্থায় একদিকে যেমন উত্তাল রাজ্য রাজনীতি ঠিক সেই সময়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে ময়দানে নামেন দেব। হুগলির তৃণমূল প্রার্থী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচারে গিয়ে ঘাসফুল শিবিরের তারকা বলেন, “কল্যাণদা তাঁর মতো কাজ করেছেন। কিন্তু আমি চাই, কাঞ্চনদা আমার হয়ে প্রচার করুক। তাহলে ঘাটালে আমার ভোট বাড়বে। আমি কাঞ্চনদাকে ফোন করে প্রচারে আসার অনুরোধ করেছি। উনি ৩০ তারিখ আমাকে সময় দিয়েছেন।” তারপর ঠিক মঙ্গলবার অর্থাৎ তিরিশে এপ্রিল দেবের সঙ্গে প্রচার করতে দেখা যায় কাঞ্চনকে। হাসিমুখেই সেলফি তুলেছেন দুজন।
সেই সেলফি সোশ্যাল মিডিয়ায় আসতেই এক সোশ্যাল মিডিয়া ইউজারের বক্তব্য, “এই জন্যই তুমি দেব। আর কেউ হতে পারবে না। রাজনীতি কীভাবে করা উচিত তা তোমার থেকে শেখার আছে। এখনও রাজনীতিতে তোমার মতো ভালো মানুষ আছে। এটাই স্বস্তি।” আরেক পক্ষের আবার মন্তব্য, “দাদা এনার সঙ্গে থেকো না কখন ৫-৬টা বিয়ে করতে ইচ্ছে করবে। না না তোমার উপর বিশ্বাস আছে, তুমি এনার মতো না। কিন্তু তাও ইনি কিন্তু মন্টু পাইলট।” অর্থাৎ মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে।
প্রচারের ফাঁকে সংবাদমাধ্যমকে কাঞ্চন বলেন, “বহু বছর ধরে কাজ করছি একসঙ্গে। দেবের চেহারা যেরকম, মনটা তার থেকেও বড়। আমার মনে হয় কোথাও, যে হাত বাড়ালেই বন্ধু পাওয়া যায়। আর আমি একজন তৃণমূল কর্মী, তৃণমূলের বিধায়ক হিসেবে, বন্ধু হিসেবে, ভাই হিসেবে তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছি। আমি চাই, ও আরও আরও আরও বিপুল ভোটে জয় লাভ করুক।” বরাবরই রাজনীতির বিপরীত স্রোতে গা ভাসিয়েছেন দেব। বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন কারোর বিরুদ্ধে কু-কথা বলে, কাদা ছড়াছড়ির রাজনীতি করেন না তিনি। গতকালের ঘটনায় তা আরো স্পষ্ট করে দিলেন।
Discussion about this post