আরজি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় রীতিমতো ব্যাকফুটে রাজ্যের শাসকদল। ঠিক এই পরিস্থিতিতে এবার তৃণমূলের সঙ্গ ছাড়লেন বর্ষীয়ান সাংসদ জহর সরকার। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়ে সংসদ পদ ছেড়ে দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন তিনি। আগামী সপ্তাহে দিল্লিতে গিয়ে রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের কাছে পদত্যাগ পত্র জমা দেবেন এই সাংসদ, সূত্রের খবর এমনটাই। শুধু সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা নয়, রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ানোরও ঘোষণা করেছেন জহর সরকার। মুখ্যমন্ত্রীকে দেওয়া চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘গত এক মাস ধৈর্য ধরে আমি আরজি কর হাসপাতালের ঘটনার বিরুদ্ধে সবার প্রতিক্রিয়া দেখেছি। ভেবেছি, সেই পুরনো মমতা ব্যানার্জীর মতো আপনি কেন ঝাঁপিয়ে পড়ে সরাসরি জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলছেন না। এখন সরকার যে সব শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নিচ্ছে, তাতে দেরি হয়ে গিয়েছে অনেক। আমার বিশ্বাস, আন্দোলনে পথে নামা মানুষরা অরাজনৈতিক এবং স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে প্রতিবাদ করছেন। কাজেই রাজনৈতিক তকমা লাগিয়ে আন্দোলনকে প্রতিরোধ করা ঠিক হবে না। এঁরা কেউ রাজনীতি নয় বরং শুধু বিচার ও শাস্তির দাবি তুলেছেন’।
চিঠিতে তৃণমূল সাংসদ আরও লিখেছেন, ‘সংসদে নির্বাচিত হবার এক বছর পরে, যখন ২০২২ সালে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর চূড়ান্ত দুর্নীতির খোলাখুলি প্রমাণ দেখে প্রকাশ্যে মতামত দিই যে দল ও সরকারের এই ব্যাপারে অত্যন্ত সক্রিয় হওয়া প্রয়োজন, তখন দলের অনেক বর্ষীয়ান নেতা আমাকে হেনস্থা করেন।’ এই চিঠির শেষে তিনি লিখেছেন, ‘আমার বক্তব্য লিখিতভাবে জানাতে বাধ্য হলাম কারণ দীর্ঘদিন আপনার সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে দেখা বা আলাপ আলোচনা করার সুযোগ পাইনি।’ ‘কিন্তু আমি আর সাংসদ থাকতে চাই না।’ ‘আমি আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই দিল্লিতে গিয়ে রাজ্যসভার সভাপতির হাতে আমার পদত্যাগপত্র জমা দেব এবং রাজনীতি থেকে সম্পূর্ণভাবে বিদায় নেব।’ এর কয়েক দিন আগেই, আরজি কর কাণ্ডে সোশ্যাল মিডিয়ায় মুখ খুলেছিলেন জহর। কেন সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে আগে পদক্ষেপ করা হয়নি, প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি। নিয়োগ দুর্নীতি মামলা ঘিরে যখন উত্তাল পরিস্থিতি, সেই সময়ও পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন জহর। সেই সময় দলের অন্দরে বিষয়টি নিয়ে কাটাছেঁড়া হয়।
Discussion about this post