আইপিএস দেবাশীষ ধর লোকসভা ভোটের আগেই ইস্তফা দিয়ে বিজেপিতে যোগ দেন। এরপর তাঁকে বীরভূমের প্রার্থী করে বিজেপি। কিন্তু দীর্ঘদিন রাজ্য সরকারের অধীনে কাজ করার পর তিনি প্রয়োজনীয় ‘নো ডিউজ’ সার্টিফিকেট পাননি। ফলে মনোনয়ন বাতিল হয় দেবাশীষ ধরের। যদিও বিকল্প প্রার্থী হিসেবে বিজেপি বীরভূম কেন্দ্রে রেখেছিল দেবতনু ভট্টাচার্যকে। এবার বীরভূমের বদলা হিসেবে রাজ্যের দুই কেন্দ্রের দুই তৃণমূল প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করার দাবি জানাল বিজেপি। বুধবারই কলকাতায় সাংবাদিক সম্মেলন করেন বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়। তিনি দাবি করেন, বসিরবাটের তৃণমূল প্রার্থী হাজি নুরুল ইসলাম মনোনয়নপত্রের সঙ্গে নো ডিউজ সার্টিফিকেট জমা করেননি। অপরদিকে দক্ষিণ কলকাতার তৃণমূল প্রার্থী মালা রায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি কলকাতা পুরসভার চেয়ারপার্সন পদ থেকে ইস্তফা না দিয়েই লোকসভায় প্রার্থী হয়েছেন। এই পদটি ‘অফিস অফ প্রফিট’ ধরা হয়। বিজেপির দাবি, এই পদে ইস্তফা না দিয়ে লোকসভা ভোটে লড়লে স্বার্থের সংঘাত হতে পারে।
বিজেপির দাবি, হাজি নুরুল ইসলাম ২০০৯ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত বসিরহাটের সাংসদ ছিলেন। তবে ২০১৪ সালে তাঁকে টিকিট দেয়নি তৃণমূল। কিন্তু নিয়ম বলে সাংসদ থাকাকালীন তাঁর বিদ্যুৎ, টেলিফোন, বাড়িঘর সংক্রান্ত কোনও বিল বাকি আছে কিনা সেটা জানাতে হয়। এবং সেগুলি মিটিয়ে ‘নো ডিউজ’ সার্টিফিকেট নির্বাচন কমিশনে জমা দিতে হয়। তবে যদি সাংসদ পদ শেষ হওয়ার পর ১০ বছর অতিবাহিত হয়ে যায় তবে তা লাগবে না। কিন্তু বিজেপির অভিযোগ, হাজি নুরুল ২০১৪ সালের ১৮ মে পর্যন্ত সাংসদ ছিলেন। সেই অর্থে ২০২৪ সালের ১৮ মে তাঁর দশ বছর পূর্ণ হচ্ছে। কিন্তু বসিরহাটের তৃণমূল প্রার্থী হাজি নুরুল ইসলাম মনোনয়ন জমা করেছেন তার ১২ দিন আগে। অর্থাৎ নির্বাচনী বিধি মেনে তাঁকে নো ডিউজ সার্টিফিকেট জমা করতে হবে। বিজেপির দাবি, হলফনামায় হাজি নুরুল নো ডিউজ সার্টিফিকেট দেখাননি। এই সার্টিফিকেট জমা দেওয়ার শেষ সময় ছিল, ১৪ মে বেলা তিনটে পর্যন্ত। বুধবারই নির্বাচন কমিশনে তাঁর মনোনয়নপত্র বাতিল করার আবেদন করেছেন বসিরহাটের বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্র।
অপরদিকে, বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় দাবি করছেন, দক্ষিণ কলকাতার তৃণমূল প্রার্থী মালা রায়, কলকাতা পুরসভার চেয়ারপার্সন থাকাকালীনই মনোনয়নপত্র জমা করেছেন। যেটা অনুচিত বলেই মনে করছে বিজেপি। অফিস অফ প্রফিট নীতি মেনে মালা রায়ের মনোনয়নপত্র বাতিলের দাবি জানাচ্ছে বিজেপি। তাঁদের আশা, নির্বাচন কমিশন তাঁদের দাবি যথাযতভাবে পরীক্ষার পর দুই তৃণমূল প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করবে। যদিও বিজেপির এই দাবি নিয়ে বসিরহাটের তৃণমূল প্রার্থী হাজি নুরুল ইসলাম এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি।
Discussion about this post