কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে একধাক্কায় চাকরি গিয়েছে ২৫,৭৫৩ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীর। আপাতত তাঁদের ভবিষ্যত ঝুলে রয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের ওপর। কারণ রাজ্যের স্কুল সার্ভিস কমিশন কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছে। তবে লোকসভা ভোটের মধ্যেই হাইকোর্টের এই রায় নিয়ে চাপে পড়েছে নির্বাচন কমিশন। কারণ লোকসভা ভোটের পরিচালনার জন্য অনেক আগে থেকেই রাজ্যের বহু শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বাছাই করা হয়ে গিয়েছিল। স্বাভাবিকভাবেই এই তালিকায় চাকরিহারাও ছিলেন। যেমন রায়গঞ্জ দেবীনগর কৈলাসচন্দ্র রাধারানী বিদ্যাপীঠের শিক্ষিকা প্রিয়াঙ্কা গুহ। তিনি ওই স্কুলের অর্থনীতির শিক্ষিকা। শুক্রবারই রাজ্যে দ্বিতীয় দফার নির্বাচন চলছে দার্জিলিং, রায়গঞ্জ ও বালুরঘাটে। ফলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছিল চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ভোটের কাজে আদৌ পাওয়া যাবে কিনা। কিন্তু শুক্রবার ভোট শুরুর একদিন আগেই প্রিয়াঙ্কাগুহকে দেখা গেল ডিস্ট্রিবিউশন সেন্টারে। নিয়মমাফিক সেখানেই সমস্ত ভোটকর্মীরা জড়ো হন ভোটগ্রহন কেন্দ্রে পৌঁছনোর জন্য। উচ্চ আদালতের রায়ে চাকরি গেলেও প্রিয়াঙ্কা নিজের দায়িত্বে অবিচল। তাঁর দাবি, মাথা উঁচু করেই বলতে পারি আমরা কোনও অন্যায় করিনি। তাই ভোটের ডিউটি করাটা আমাদের কর্তব্য
সদ্য চাকরি চলে যাওয়ার মানসিক চাপ দূরে সরিয়ে রেখেই রায়গঞ্জ গার্লস হাইস্কুলের বুথে প্রিসাইডিং অফিসারের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন প্রিয়াঙ্কা গুহ। তিনি বলেন, গত তিন-চারদিন আমার উপরে কী ঝড় বয়ে গেছে সেটা আমিই জানি। পাঁচবছর ধরে শিক্ষিকা হিসাবে কাজ করার পর আচমকা এই অবস্থার সম্মুখীন হব ভাবতেই পারিনি। ভোটের ডিউটি করার ফাঁকেই তিনি জানান, মানসিক চাপ ও আশঙ্কা রয়েছে। তবে ভরসা রয়েছে সুপ্রিম কোর্টের ওপর। প্রিয়াঙ্কার আশা, দেশের সর্বোচ্চ আদালত তাঁদের সমস্যার সুনিশ্চিত সমাধান করবে। উল্লেখ্য চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকারা ভোটের কাজে অংশগ্রহন করতে পারবেন কিনা সেটা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হলেও নির্বাচন কমিশন জানিয়ে দেয় তাঁরা নির্বাচন পরিচালনার কাজ করতে পারবেন। সেই মতো প্রিয়াঙ্কার মতো শিক্ষিকারা মানসিক চাপ সামলে এগিয়ে আসায় স্বস্তিতে প্রশাসন।
Discussion about this post