স্কুল সার্ভিস কমিশনের ২০১৬ সালের পুরো প্যানেল বাতিল করল কলকাতা হাইকোর্ট ৷ গ্রুপ-সি, ডি, নবম-দ্বাদশ পুরো প্যানেল বাতিলের নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও শব্বার রাশিদের ডিভিশন বেঞ্চ। সোমবার এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ২৮১ পাতার রায় দান দিল উচ্চ আদালত ৷ সেই রায়ে ২৩৭৫৩ এর বেশি নিয়োগ বাতিল করল ডিভিশন বেঞ্চ৷ আদালতের লিখিত পর্যবেক্ষণ, প্যানেলের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর কোন চাকরিই বৈধ নয়। শুধু সোমা দাস নামে এক মহিলার চাকরি থাকবে। কারণ তিনি ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত। ফলে মানবিক দিক থেকে তার চাকরি বহাল রাখল কলকাতা হাইকোর্ট। একইসঙ্গে নতুন টেন্ডার ডেকে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া চালুর নির্দেশ দিল স্কুল সার্ভিস কমিশনকে৷ এতদিন বেআইনিভাবে যারা চাকরি করেছেন তাদের এক মাসের মধ্যে পুরো বেতন দিতে হবে। পাশাপাশি ১২ শতাংশ সুদ দিতে হবে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে। ডি আই এবং জেলাশাসকদের মাধ্যমে সেই বেতন দিতে হবে বলে নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের। একইসঙ্গে সিবিআই’কে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্ত চালিয়ে যাওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷ পাশাপাশি সমস্ত ওএমআর শিটের কপি এসএসসি সার্ভারে আপলোড করতে হবে৷ পরবর্তী তদন্ত চলাকালীন নিয়োগ দুর্নীতিতে যদি রাজ্যের আরও কোনও মন্ত্রীর জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে তাঁকে গ্রেফতার করতে পারবে সিবিআই৷
উল্লেখ্য, হাইকোর্টের নির্দেশে ২০১৬ সালে রাজ্যে সরকারি স্কুলে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি কাণ্ডের তদন্তে নেমেছিল সিবিআই৷ এই ঘটনায় একের পর এক গ্রেপ্তার হয়েছিল তৃণমূলের হেভিওয়েটরা। গ্রেফতার করা হয়েছে তৎকালীন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে৷ এসএসসির ওএমআর শিট দেখার দায়িত্বে ছিল নাইসা নামক এক সংস্থা। গাজিয়াবাদে নাইসার অফিসে হানা দিয়ে প্রাক্তন কর্মী পঙ্কজ বানসালের থেকে উদ্ধার হয় হার্ডডিস্ক, পেনড্রাইভ এবং বহু তথ্য। এর পরেই পুরো এসএসসি দুর্নীতি সামনে আসে। উদ্ধারিককৃত হার্ডডিস্ক কতটা গ্রহণযোগ্য তা নিয়ে দীর্ঘদিন টানাপোড়েনে ছিল আদালত। প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এই মামলায় প্রচুর অযোগ্য শিক্ষকের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন ৷ রাজ্য সরকারের আবেদনের প্রেক্ষিতে ওই নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট৷ এরপর গত ৯ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে কলকাতা হাইকোর্টে গঠিত হয় বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি শাব্বার রাশিদির বিশেষ ডিভিশন বেঞ্চ। সেখানে এসএসসি মামলার শুনানি শুরু হয় গত ডিসেম্বর মাস থেকে । ছয় মাসের মধ্যে মামলার প্রক্রিয়া শেষ করার নির্দেশ দেয় সর্বোচ্চ আদালত।
প্রসঙ্গত, কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি থাকাকালীন এসএসসির নিয়োগ দুর্নীতি চিহ্নিত করেছিলেন অভিজিৎ গাঙ্গুলী। সিবিআই তদন্তের নির্দেশও দিয়েছিলেন। রাতারাতি হয়ে উঠেছিলেন চাকরিপ্রার্থীদের ‘ভগবান’। নানা টানাপোড়েনের পর অবশেষে সোমবার ২০১৬ সালের পুরো প্যানেল বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তবে এখন আর তিনি বিচারপতি নন। সেই পাঠ চুকিয়ে রাজনীতিতে তার আবির্ভাব ঘটেছে। লোকসভা নির্বাচনে তমলুকের বিজেপি প্রার্থী তিনি। এবার ভোটপ্রচারের ব্যস্ততার মাঝে রায় নিয়ে মুখ খুললেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগ দাবি করলেন তিনি।
কি আশ্চর্য সমাপতন! সেই ২০০০ সালে রাজ্যে তখন ভরা বাম শাসন। রাজ্যের প্রধান বিরোধী নেত্রী তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সময়...
Read more
Discussion about this post